স্টাফ রিপোর্টার: দ্বিতীয়বার কলকাতার মেয়র (Mayor of Kolkata) হিসাবে শপথ নিচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম। কর্পোরেশন তৈরির পর এর আগে ৫২ জন মেয়র-ই হয় কাউন্সিল চেম্বার নয়তো টাউন হলে শপথ নিয়েছেন। কিন্তু এই প্রথম নজির গড়ে পুরসভার লনেই খোলা আকাশের নিচে শহরের বিশিষ্টদের উপস্থিতিতে ৩৮তম মেয়র হিসাবে দায়িত্ব নেবেন ফিরহাদ। সঙ্গে শপথ নেবেন মেয়র পরিষদের সদস্য ও চেয়ারপার্সনও।
আমন্ত্রিত শহরের শেরিফ মণিশংকর মুখোপাধ্যায় ছাড়াও কবি জয় গোস্বামী, শুভাপ্রসন্ন, নচিকেতা, অভিনেতা দেব ও ডাঃ কুণাল সরকার, অপূর্ব ঘোষ, অভিজিৎ চৌধুরির মতো চিকিৎসকরাও। আসবেন মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল ও মহমেডানের কর্তারাও। ফিরহাদের ইচ্ছাতেই পুরসভার তরফে আমন্ত্রণ গিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, মায়ের বাড়ি, ভারত সেবাশ্রম, জৈন মন্দির ও বুদ্ধমন্দিরের পাশাপাশি তিন ইমাম ও চার আর্চ বিশপের কাছেও। তাঁরাও আসবেন। পিজি হাসপাতালের ডিরেক্টর ও সুপার ছাড়াও অ্যাপোলো, মেডিকা হাসপাতালেও আমন্ত্রণ গিয়েছে। সব মিলিয়ে ১৭৪ জন বিশিষ্ট আমন্ত্রিত, আগে এভাবে কখনও বিশিষ্টদের আমন্ত্রণ করা হয়নি। সপরিবার শপথে আসবেন ফিরহাদ।
[আরও পড়ুন: ফিরে দেখা ২০২১: করোনাকালে সম্পত্তি বাড়ল কাদের? ‘বাড়ন্ত’ কার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার?]
পুরসভার সার্জেন্ট আবদুল হাকিমের ছেলে ফিরহাদ এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বার মেয়র হিসাবে নির্বাচিত হচ্ছেন। বন্দরের ল’অফিসার হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে আবদুল হাকিম বেশ কিছুদিন পুরসভার সার্জেন্ট হিসাবে চাকরি করেছিলেন। মেয়র পদে দ্বিতীয় কোনও মনোনয়ন পত্র জমা না পড়ায় সোমবারই শহরের মহানাগরিক নির্বাচিত হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। নিয়ম মেনে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে মেয়র ঘোষণা করবেন কমিশনার। পুর আইনকে মান্যতা দিয়ে পুরসভার লনেই কাউন্সিলরদের নিয়ে অস্থায়ী অধিবেশন বসবে। বস্তুত এই কারণেই শপথ গ্রহণ মঞ্চে মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও পারিষদদের ঠিক উলটোদিকে কাউন্সিলরদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রথমে প্রোটেম স্পিকার রামপেয়ারে রাম শপথ পড়াবেন চেয়ারপার্সন মালা রায়কে। রীতি মেনে এর পরে চেয়ারপার্সন মেয়র ও পারিষদদের শপথ পাঠ করানোর কথা। মেয়র পরিষদের প্রথম বৈঠকে ‘ভিশন অফ কলকাতা’র রূপরেখা চূড়ান্ত হবে। বণ্টন হবে পারিষদদের দপ্তরও। পুরনো পারিষদদের দপ্তর অনেকটাই অপরিবর্তিত থাকছে। দেবাশিস কুমারকে আরও একটু বাড়তি গুরুদায়িত্ব দেওয়া হবে।
১৯৮০ সালের পুরআইন মেনে অষ্টম পুরবোর্ডের নবম মেয়র ফিরহাদের শপথ গ্রহণ ঘিরে উৎসবের পরিবেশ। মেয়রের ঘরের ভিতর ও বাইরের রং ও পালিশ বদলেছে। গালিচার রং নীল থেকে বদলে ঘন সবুজ এবং দেওয়ালের ওয়াল পেপারও হালকা সবুজের ভিতর লতানো ফুলের সারি। আগে মেয়রের ঘরে ছিল নরম আলো, এখন আলোর উজ্জ্বলতা বেড়েছে। মহানাগরিকের আসনের পিছনে ঠিক মাথার উপর মহাত্মা গান্ধীর ছবির দু’পাশে কবিগুরুকে লেখা মেয়র বিধান রায়ের চিঠি ও উত্তর। নিচে উজ্জ্বল আলোয় শহরের বর্ণময় মানচিত্র দ্বিতীয়বার মেয়র হয়ে আসা ফিরহাদের ভাবনার উপস্থিতি।