ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কংগ্রেস থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিষ্কারের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে আজও। শনিবার দলের এক অনুষ্ঠানে এমনই আক্ষেপের সুরে ঝরে পড়ছিল প্রবীণ রাজনীতিক তথা কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যর গলায়। আফসোস নিয়ে ভরা মঞ্চে তিনি বলেছিলেন, “সেদিন মমতাকে বহিষ্কার করা ঠিক হয়নি। আজও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে।” প্রবীণ নেতার এহেন মন্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলেছে ঠিকই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলের দায় যেভাবে এড়িয়ে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, তাও কম সমালোচনার নয়। এনিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শুভঙ্কর সরকার বলেন, ''আমি ঠিক শুনতে পাইনি উনি কী বলেছেন।'' অথচ শনিবারের সেই অনুষ্ঠানে প্রদীপবাবুর পাশেই তো ছিলেন শুভঙ্কর সরকার। বললেন, ''পাশে বসলেও টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে অনেক সময় ভালো শোনা যায় না। কী বলেছেন, জেনে তবেই এ বিষয়ে বলতে পারব।''
প্রায় তিন দশক আগে কংগ্রেস এবং তৎকালীন দলের যুবনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে ঠিক কী ঘটেছিল, তা আজ সকলেই জানেন। যুবনেত্রী থেকে জনপ্রিয়তা সিঁড়ি বেয়ে শীর্ষে চলে যাওয়ার পর সোমেন মিত্র-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে চোরা দ্বন্দ্ব দেখতে পায় দল। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, মমতাকে বহিষ্কার করে সোমেনকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এসবের নেপথ্য নায়ক ছিলেন সীতারাম কেশরী। সেই খেদ আজও ভুলতে পারেননি প্রদীপ ভট্টাচার্য। শনিবারের অনুষ্ঠানে তিনি বলেই ফেলেন, “সেদিন সোমেনের উপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল যে মমতাকে বহিষ্কার করতে তিনি বাধ্য হন। তার প্রায়শ্চিত্ত আজও কংগ্রেসকে করতে হচ্ছে।”
এনিয়ে বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি সাফ জানান, অনুষ্ঠানে প্রদীপবাবুর পাশে বসে থাকলেও ঠিকমতো তাঁর বক্তব্য শুনতে পাননি। কারণ, অনেক সময়ে প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে শব্দ শুনতে সমস্যা হয়। তাছাড়া মঞ্চে বসে তিনি সংগঠনের কিছু কাজকর্ম করছিলেন। সবমিলিয়ে মমতাকে নিয়ে প্রদীপবাবুর মন্তব্য তাঁর কান এড়িয়ে গিয়েছে। তাই এবিষয়ে এখনই কোনও প্রতিক্রিয়া দেবেন না। সেইসঙ্গে শুভঙ্করবাবু এও জানান, ''উনি যা বলেছেন, তার ব্যাখ্যা উনিই দিতে পারবেন।'' তবে কেন প্রদীপবাবুর মন্তব্য বর্তমান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কর্ণগোচরই হল না, সেই প্রশ্ন এড়ানো যাচ্ছে না।