shono
Advertisement

এবার যন্ত্রমানব করবে চিকিৎসা! পূর্ব ভারতে চালু প্রথম ফোর্থ জেনারেশন রোবোটিক সার্জারি

যে অস্ত্রোপচারের পর ব্যথা থাকে না তা কীভাবে হয় জানেন?
Posted: 03:27 PM Feb 11, 2021Updated: 07:54 PM Feb 11, 2021

অভিরূপ দাস: ভন্টেড দ্য ভিঞ্চি। রক্ত মাংসের মানুষ নয়। অথচ সেই করছে একের পর এক অস্ত্রোপচার। পূর্ব ভারতে প্রথম ফোর্থ জেনারেশন রোবোটিক সার্জারির উদ্বোধন হল হাওড়ার নারায়ণা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের হাত ধরে। ইতিমধ্যেই চারটে জটিল অস্ত্রোপচার সেরে ফেলেছে দুই জোড়া ধাতব হাত। ব্লাডার ক্যানসার, অ্যাড্রিনালিন গ্ল্যান্ডে সমস্যা, কিডনি ক্যানসার, এবং যোনিপথে টিউমার। এমন চার গুরুতর অসুস্থ রোগীর অস্ত্রোপচার করেও চিন্তিত নয় যন্ত্রমানব। মস্তিষ্কই যে নেই তার।
বছর আটত্রিশের রুমেলা চক্রবর্তী (নাম পরিবর্তিত)। বুধবারই তাঁর ‘র‌্যাডিকাল হিসটেরেকটমি’ হয়েছে। অনিয়মিত ঋতুস্রাবের সমস্যায় ভুগছিলেন রুমেলা। বায়োপসি করতে গিয়ে ইউটেরাসে ক্যানসার ধরা পরে। দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। বুধবার দুপুরে রোবোটিক অস্ত্রোপচার হয়েছে রুমেলার। বৃহস্পতিবারই ছুটি পেয়ে যাবেন তিনি! অস্ত্রোপচারের পর এত দ্রুত ছুটি চিকিৎসা জগতে বিরল।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘গণতন্ত্রের কণামাত্র বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের সাফাই প্রয়োজন’, মমতাকে তীব্র আক্রমণ রাজ্যপালের]

রোবোটিক সার্জন ডা. কৌস্তভ বসু জানিয়েছেন, ফোর্থ জেনারেশন রোবোটিক সার্জারির এটাই বৈশিষ্ট্য। শুধুমাত্র দ্রুত রোগীকে ছেড়ে দেওয়াই নয় এ অস্ত্রোপচারে রক্তপাতও নামমাত্র। কারণ, কোনও অংশে একফোঁটা রক্তপাত হলে মুহূর্তে তা টের পেয়ে যায় রোবট।
নয়ের দশকে ওপেন সার্জারির সময়ে তলপেটের কোনও অস্ত্রোপচার করতে গেলে শরীরে অনেকখানি কাটাছেঁড়া করতে হত। পরবর্তীকালে ল্যাপরোস্কোপিক সার্জারিতে পেটে কয়েকটা ফুটো করেই চলত অস্ত্রোপচার। তবে তাতে সমস্যা ছিল অন্য। ল্যাপরোস্কোপিক সার্জারির ‘ভিশন’ বা দৃষ্টি নিখুঁত ছিল না। ডা. কৌস্তভ বসু জানিয়েছেন, ল্যাপরোস্কোপিক সার্জারিতে ২ডি ভিশনে কাজ করতে হতো চিকিৎসককে। অর্থাৎ টিভির মতো একটা স্ক্রিনে অস্ত্রোপচার দেখা যেত। কিন্তু নয়া রোবটে ৩ডি ভিশনে রোগীকে দেখা যায়। চতুর্থ প্রজন্মের রোবটের চোখে রয়েছে ফায়ার ফ্লাই টেকনোলজি, যা ক্যানসার কোষকে আলাদা করে চিনতে পারে।
অস্ত্রোপচারকারী এই রোবটের দু’টি অংশ। একটি ‘পেশেন্ট কার্ট।’ অন্যটি ‘সার্জন কনসল।’ পেশেন্ট কার্ট অংশে শুইয়ে দেওয়া হয় রোগীকে। সার্জন কনসল থেকে রোবটকে নিয়ন্ত্রণ করেন চিকিৎসক। অনেকটা ভিডিও গেমের জয়স্টিক বাটনের মতো। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এই অস্ত্রোপচারও ভিডিও গেম খেলার মতোই সহজ। পেটের গভীরে সূক্ষ্মতম যেকোনও জায়গাতেই হোক পৌঁছে যায় রোবটের হাত বা এন্ডোরিস্ট। যা ঘুরতে পারে মানুষের কব্জির থেকে অনেক বেশি। ৫৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত। এ অস্ত্রোপচারে এমন কিছু দ্রব্য ব্যবহার করা হয় যা একবার মাত্র ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হয়। সে কারণেই এই অস্ত্রোপচার কিছুটা খরচ সাপেক্ষ। নারায়ণা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ক্লিনিকাল ডিরেক্টর ডা. সুমন মল্লিক জানিয়েছেন, যেহেতু অস্ত্রোপচারের পর ব্যথা থাকে না, তাই হাসপাতালে অনেক কম দিন থাকতে হয় রোগীকে। অস্ত্রোপচারের অতিরিক্ত খরচটা সেক্ষেত্রে পুষিয়ে যায়।

[আরও পড়ুন: ভোটের আগেই ছাড়পত্র পেল নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো, ১৮ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে পারে পরিষেবা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement