প্রসূন বিশ্বাস: ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডানের পর মতুয়া সম্প্রদায় কি নতুন ‘ফ্যানবেস’ তৈরি করতে চলেছে ময়দানে? অন্তত ফুটবলকে ঘিরে মতুয়া সম্প্রদায়ের সাম্প্রতিক কার্যকলাপ দেখে সেরকমই মনে হচ্ছে। এই মরশুমে কলকাতা লিগে পাঁচ-পাঁচটি দল নামিয়েছেন এই সম্প্রদায়ের ফুটবল কর্তারা।
পুরুষ দলের পাশাপাশি বাদ যায়নি নার্সারি থেকে মহিলা বিভাগও। কলকাতা মাঠে এই দুই বিভাগেও দল নামিয়েছে তারা। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করেই এগিয়ে আসছে মতুয়া ফুটবল ফাউন্ডেশনও। গতবছর কলকাতা লিগে মিলনবীথির সঙ্গে গাঁঠছড়া বেধে কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনে দল নামালেও এবারে তাঁদের নতুন সংযোজন নার্সারি বিভাগ ও পঞ্চম ডিভিশন গ্রুপ বি-তে মতুয়া ফুটবল ফাউন্ডেশন মিত্র সম্মেলনী। শুক্রবার কলকাতা ময়দানে পঞ্চম ডিভিশনে আত্মপ্রকাশের দিনই টাউন মাঠে ক্লাবটি সজল বাগের গোলে জয় পেল মিলন চক্রের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ঘরোয়া লিগের চতুর্থ ডিভিশন এবং একটি মেয়েদের দল রয়েছে এই সম্প্রদায় পরিচালিত।
[আরও পড়ুন: এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মৃত্যুমিছিল, মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১]
কিন্তু কেন হঠাৎ এমন পরিকল্পনা? এই ঘটনার পিছনে রয়েছে কলকাতা ময়দানের মোহনবাগান, মহামেডান এই দুই বড় ক্লাবে খেলা প্রাক্তন ফুটবলার গৌতম ঠাকুর। কলকাতা ক্লাবে খেলা গৌতম নিজে এই সম্প্রদায়ের সন্তান। তিনি নিজে অনুভব করছিলেন তাঁদের সম্প্রদায় থেকে ফুটবলার তুলে আনার। সেই জন্যই নদীয়ার বগুলাতে মতুয়া সম্প্রদায়ের ছেলেদের নিয়ে একটি ফুটবল অ্যাকাডেমি গড়ে তোলেন কয়েক বছর আগে। যে অ্যাকাডেমি বাড়তে বাড়তে এখন পাঁচটি ক্লাবের ফুটবলার জোগান দিচ্ছে। গৌতম বলেন, “কলকাতা মাঠে বড় দলের জার্সি গায়ে যখন নামতাম তখনই লক্ষ লক্ষ সমর্থক দেখে অনুভব করতাম, আমাদের সম্প্রদায়েও এমন প্রচুর মানুষ রয়েছেন। কিন্তু কোনও ফুটবল ক্লাব নেই। আমাদের যদি একটা ফুটবল দল থাকত, তাহলে আমাদের ছেলেরাও এই সমর্থনটা পেতে পারত। এই ভেবেই এগিয়ে আসা।” এবার আইএফএ-র উদ্যোগে যে চারজন তরুণ বাঙালি ফুটবলার স্পেনে ট্রায়াল দিতে যাবেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম এই অ্যাকাডেমির ছাত্র বিশাল সূত্রধর ।
উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর সংলগ্ন অঞ্চল ও নদীয়াতে যেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ থাকেন সেখানে ব্যাপকহারে প্রচার চালানো হয়েছে এই ফুটবল অ্যাকাডেমির। কলকাতা লিগে পাঁচটি ক্লাব পরিচালনা করতে কমপক্ষে ১৫০ জন ফুটবলার ও কোচিং স্টাফেদের খরচ আট থেকে দশ লক্ষ টাকার মত। সেই টাকা উঠে এসেছে এই অঞ্চল থেকেই। সদস্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সেই সব সদস্যদের কাছে আরজি জানানো হয়েছে বাড়িতে যদি কোনও শুভ অনুষ্ঠান করেন তারা তাহলে সেই অনুষ্ঠানের ৫-১০ শতাংশ অর্থ তাঁরা যেন দেন ফুটবল ফাউন্ডেশনের তহবিলে। আনন্দ সহকারে সদস্যরা সেই অর্থ দান করছেন প্রতিনিয়ত। আর এতেই অক্সিজেন পাচ্ছে মতুয়া ফুটবল ফাউন্ডেশন।