সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৪৭ সালের পর এই প্রথমবার। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে ছত্তিশগড়ের সুকমা জেলার পুবর্তি গ্রামে। মাওবাদী প্রভাবিত হিসাবেই পরিচিত এই গ্রাম। একসময় নকশালদের দ্বারা পরিচালিত সমান্তলার সরকারের শাসন ছিল এই গ্রামে। এখানে পা রাখতে ভয় পেত পুলিশও। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে পালটাচ্ছে। মাওবাদীদের কার্যকলাপ রুখতে ও গ্রামবাসীদের নিরাপত্তার জন্য় সেখানেই ঘাঁটি তৈরি করছে নিরাপত্তাবাহিনী।
সুকমা ও বিজাপুর জেলার সীমানায় অবস্থিত পুবর্তি। যা নিষিদ্ধ গেরিলা দলের স্বঘোষিত কমান্ডার তথা মাও নেতা হিদমার গ্রাম নামে পরিচিত। এখান থেকেই নিরাপত্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে কৌশল নিত মাওবাদীদের। ছক কষা হত বিভিন্ন হামলার। রবিবার এই গ্রামেই সমস্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন সিআরপিএফ ও পুলিশের আধিকারিকরা। সেখানে ঘাঁটি তৈরি করে পথচলতি সকলের উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে পালাল কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, বেদনায় একসঙ্গে আত্মহত্যা দম্পতির!]
জানা গিয়েছে, একটি বিশ্রামাগার যা অতীতে স্কুল ছিল সেটিরও দখল নিয়ে নিয়েছে নিরাপত্তাবাহিনী। সেখান থেকে প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মাওবাদীদের প্রশিক্ষণ শিবির ছিল। গ্রামের তরুণদের সঙ্গে সেখানে বৈঠক করে দলে নিত মাওবাদীরা। গত কয়েক মাসে এই এলাকাতেই খোলা হয়েছে একাধিক ক্যাম্প। যাতে যখনই কোনও জায়গা থেকে মাওবাদী কার্যকলাপের খবর আসবে সঙ্গে সঙ্গে যেন জরুরি পদক্ষেপ করা যায়।
মাঝে গ্রামে গিয়ে হিদমার মায়ের সঙ্গে কথাও বলেন সুকমার পুলিশ সুপার। আশ্বাস দেন সবরকমভাবে তাঁকে সাহায্য করার। একই সঙ্গে তিনি সকল গ্রামবাসীদের অনুরোধ জানান, মাওবাদী কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকার জন্য। একমাত্র তাঁদের সহায়তার দ্বারাই যে গ্রামের উন্নতি সম্ভব সেকথাও জানানো হয়। এমনকী সমস্ত সরকারি প্রকল্পের আওতায় তাঁদের আনারও প্রতিশ্রুতি দেন পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্যান্য প্রান্তে নকশালপন্থীদের দৌরাত্ম্য অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও গড়চিরৌলি, সুকমা, দান্তেওয়াড়ার মতো এলাকায় এখনও স্বমহিমায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে মাওবাদীরা। কেন্দ্রীয় সরকার মাওবাদীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করার পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্র যাই দাবি করুক না কেন, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও মহারাষ্ট্রে ফের শক্তি বাড়াচ্ছে লাল সন্ত্রাস। বিশেষ করে সুকমা, দান্তেওয়াড়া, গড়চিরৌলির মতো এলাকায় বারবার মাওবাদীদের আস্ফলন চিন্তা বাড়াচ্ছে সরকারের।