সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষার মরশুম মানেই কার্যত ব্রহ্মপুত্রের অভিশাপ নেমে আসা অসমের বুকে। ফুঁসে ওঠা ব্রহ্মপুত্র নদের দু কূল ছাপানো জলে ভেসে যায় উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। উপকূলবর্তী জেলা তো বটেই, প্লাবন থেকে রক্ষা মেলে না কোনও জেলারই। চলতি বছর অসমের বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ক্ষতির খতিয়ান দেখতে গিয়ে যথেষ্ট ধাক্কা খেতে হচ্ছে। তিরিশ জেলার সাড়ে ২৪ লক্ষ মানুষ বানভাসি। বন্যার জলে কতজন যে ভিটেমাটি হারিয়েছেন, তার হিসেব নেই। অনেকের ঠাঁই হয়েছে ত্রাণশিবিরে। তবে সবচেয়ে বিপর্যস্ত কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান। তার অধিকাংশই জলের নিচে ডুবে গিয়েছে। ভয়ে নিজেদের আস্তানা ছেড়ে পালাচ্ছে গণ্ডার, হরিণের দল। আর গিয়ে পৌঁছচ্ছে লোকালয়ে। একদিকে প্রকৃতির রুদ্ররোষে বন্যপ্রাণীর ভয়, আরেকদিকে বন্যপ্রাণীদের ভয়ে কাঁটা মানুষ - এ কেমন লীলা!
জলমগ্ন অসমের বহু জেলা। ছবি: পিটিআই।
প্রায় মাসখানেক ধরে বৃষ্টি চলছে অসমে (Assam)। যার জেরে ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর বেড়েছে। এবার তা বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ফলে একাধিক জেলা প্লাবিত। কাছাড়, কামরূপ, ধুবড়ি, নগাঁও, গোয়ালপাড়া, করিমগঞ্জ, ডিব্রুগড়, লখিমপুর, জোড়হাট, ধেমাজি, বঙ্গাইগাঁও - একের পর এক জেলা ক্রমশ ডুবন্ত। জনজীবন বিপর্যস্ত। বাড়ির বাইরে জলের স্রোত দেখে ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলছেন সাধারণ মানুষজন। কোথাও কোথাও ভূমিধস নেমেছে। পরিসংখ্যান বলছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪৭ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে (Relief camps)নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের।
[আরও পড়ুন: স্বামীর বিদায়ী ভাষণের সময় দামি পোশাকে অক্ষতা! নেটিজেনদের কটাক্ষের মুখে সুনাক জায়া]
তবে এবারের বন্যায় (Flood)সবচেয়ে বিপর্যস্ত কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান। তার প্রায় ৭০ শতাংশ জলের নিচে। প্রকৃতির মাঝে থাকা বন্যপ্রাণীরা এত জল দেখে আতঙ্কিত! জল থেকে বাঁচতে নিজেদের বাসস্থান ছেড়ে পালাচ্ছে গণ্ডারের দল। কাজিরাঙা (Kaziranga National Park) গণ্ডারের জন্য বিখ্যাত। তাদের সংরক্ষণে বরাবর অতি সতর্ক কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক বছরে এখানে গণ্ডারের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু তাদের সেই নিরাপদ বাসভূমিই এখন অনিশ্চয়তার কবলে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গোটা কাজিরাঙার প্রায় ১৫ হাজার বন্যপ্রাণী (Wild Animals) বন্যপ্রাণীর মুখে। অসমের বন্যায় এখনও পর্যন্ত ৯২ টি প্রাণীর মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে ৯৪টি বন্যপ্রাণীকে।