সুকুমার সরকার, ঢাকা: ভয় ধরাচ্ছে বাংলাদেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। জারি রয়েছে ভারী বর্ষণও। যার জেরে পাহাড় ধসে প্রাণ হারিয়েছেন ২ জন রোহিঙ্গা। আগস্ট মাসে এই বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা করতে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার, ঢাকায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনার নির্দেশের কথা জানান পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবার বন্যার আশঙ্কা করছেন। বৃষ্টির প্রভাবও বাড়তে পারে। দেশের মানুষকে বন্যা থেকে রক্ষার জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। দেশের ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ থানাগুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গুলির লড়াই, নিহত ১! কক্সবাজার থেকে পাকড়াও ৩ জঙ্গি]
এদিকে, ভারি বর্ষণের ফলে পাহাড় ধসে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ফের প্রাণহানি ঘটে। বুধবার ভোরে উখিয়ার ৮ ও ৯ নম্বর ক্যাম্পে ধস নামে। দুজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়। এছাড়া আরও কয়েকজন জখম হয়েছেন। এর আগে গত ১৯ জুন উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। অন্যদিকে, বৃষ্টি আর ধসে সুনামগঞ্জ ও সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় চলছে বন্যা। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে সুনামগঞ্জের কয়েকটি এলাকা।
প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে সুরমা-সহ সব নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তলিয়ে গিয়েছে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতকের বিভিন্ন এলাকা। জলবন্দি লক্ষ লক্ষ মানুষ৷ আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, গোটা জুলাই মাস জুড়েই বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে সবকটি নদ-নদীর জলস্তর বেড়েই চলেছে। ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদের জল বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে জল বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্র নদের নুনখাওয়া পয়েন্টে ৪৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং চিলমারী পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার মাত্র ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে চাষবাসের। পাট, বাদাম, ভুট্টা-সহ নানা শাকসব্জি এবং অন্যান্য ফসলের খেত জলের তলায় চলে গিয়েছে।