সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: বিপদ যে কত ভয়াবহ হতে পারে, সেই আঁচ করা গিয়েছিল বুধবার থেকেই। বৃহস্পতিবার দিনভর টানা বৃষ্টিতে পশ্চিমের জেলাগুলিতে দুর্ঘটনার খবর মিলেছে। কোথাও কাঁচা বাড়ি ভেঙেছে তো কোথাও নির্মীয়মাণ সেতুর লোহার কাঠামো ভেসে গিয়েছে জলের তোড়ে। শুক্রবার সকাল পরিস্থিতির আরও অবনতি। অজয় নদের (Ajay River) বাঁধ ভেঙে পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়ার বহু অংশ প্লাবিত (Flood)। জলের তলায় বেশ কয়েকটি গ্রাম। ঘর হারানো মানুষজন একটু ডাঙার খোঁজে উত্তাল নদীর স্রোতের মধ্যে দিয়েই সাঁতরে চলেছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে একাধিক ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলছে। প্রাণহানি নিয়েও আশঙ্কায় প্রশাসন।
বীরভূমের (Birbhum) নানুর, ইলামবাজারে প্লাবন পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল আগেই। শুক্রবার সকালে দেখা গেল, নানুরের থুপসরা পঞ্চায়েতের সুন্দরপুর গ্রামের কাছে অজয় নদের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। আর বিদ্যুৎগতিতে জল ঢুকে প্লাবিত এখনও পর্যন্ত ১৮ থেকে ২০টি গ্রাম। সবথেকে খারাপ অবস্থা সুন্দরপুর গ্রামের। এখানে প্রায় ১২০টি পরিবারের বাস, বেশিরভা বাড়িই মাটির। সেগুলি ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, জলের নিচে চলে যাওয়া ওই গ্রামে অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে। প্লাবনের বিপদের মধ্যেই উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। তবে এখনও প্রশাসনের কেউ সেখানে পৌঁছতে পারেনি বলে খবর।
[আরও পড়ুন: দক্ষিণ দিনাজপুরে শুটআউট, টাকা নিয়ে অশান্তির জেরে ব্যবসায়ীকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি]
সাতসকালে মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর, মালিয়ারা ও গণপুর – তিনটি গ্রামের কাছে অজয় নদের বাঁধ ভেঙেছে। বাঁধ ছাপিয়ে জল ঢুকতে শুরু করেছে আউশগ্রামের (Aushgram) সাঁতলাতেও। জলবন্দি বেশকিছু গ্রামের মানুষ। আউশগ্রামের সাঁতলায় অজয়ের বাঁধ ভেঙেছে। তাঁদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরানোর চেষ্টা চলছে। আউশগ্রামের সাঁতলা গ্রাম থেকে সাঁতরে বেরিয়ে এসে বাঁচার চেষ্টা করছেন তাঁরা। বাঁকুড়ার পরিস্থিতিও তথৈবচ। জলের তীব্র স্রোতে বাঁশের সাঁকো ভেঙে পাত্রসায়ের, সোনামুখীর বহুলাংশ প্লাবিত। গন্ধেশ্বরী, দ্বারকেশ্বর নদী ফুঁসছে। দ্বারকেশ্বরের জলে হুগলির (Hooghly) আরামবাগ, গোঘাট-সহ একাধিক ব্লক জলমগ্ন। উদ্ধারকাজে নামানো হচ্ছে সেনাবাহিনী।
এদিকে, আবহাওয়ার দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, সপ্তাহান্তেও এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই নেই। দক্ষিণবঙ্গে কমলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি শুরু হবে। তারউপর ডিভিসি জল ছাড়ার ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। তবে লকগেটগুলি সুরক্ষিত রাখতে শুক্রবার সকালে মাইথন, পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।