সুকুমার সরকার, ঢাকা: বংলাদেশে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। অত্যন্ত বেশি প্রভাবিত হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা। ওই অঞ্চলে জলবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। বন্যার জেরে সুনামগঞ্জ শহর গোটা দেশ থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই দুই জেলায় প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রশাসনের হিসাবে বলা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বন্যার জেরে সিলেটে ওসমানি বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বন্যায় আটকে পড়া মানুষজনকে উদ্ধার করতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের আটটি উপজেলায় সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। দেশটির আরও কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সারা দেশে ১৯শে জুন থেকে শুরু হওয়া স্কুল সার্টিফিকেট বা এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: রাষ্ট্রসংঘে ফের চিনা প্রাচীর, পাক জঙ্গিকে নিষিদ্ধ করার ভারতের চেষ্টায় জল ঢালল বেজিং]
বিবিসিকে সুনামগঞ্জের জেলাশাসক মহম্মদ জাহাঙ্গির হোসেন জানান, আটকে পড়া মানুষজনকে কীভাবে উদ্ধার করা হবে সেটাই এখন প্রধান বিষয়। তিনি বলেন, “ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বর্ষণের জন্য বৃহস্পতিবার রাত থেকে ১২ ঘন্টাতেই সুনামগঞ্জে চার ফুট জল বেড়ে যায়। জেলা শহরের সব রাস্তায় জল জমেছে। কোথাও বুক সমান জল এবং কোথাও তার চেয়েও বেশি জল জমেছে। সুনামগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগের হাইওয়েগুলিও জলের তলায়। ফলে শহর বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।”
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আধিকারিক আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানিয়েছেন, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৭২ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ১২২ বছরে এটি সর্বোচ্চ রেকর্ড। সেই বৃষ্টির জল খুবই দ্রুত গতিতে সুনামগঞ্জ এবং সিলেট অঞ্চলে নেমে এসেছে। সেজন্য বন্যা অল্প সময়ে সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টি অব্যাহত আছে এবং আরও কয়েকদিনে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার আরও অবনতি হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি জানিয়েছেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় দেশের উত্তরে কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী-সহ কয়েকটি জেলাতেও আগামী কয়েকদিন বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।