সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়াবহ ভূমিকম্পের (Earthquake) পিছু পিছু এবার হামলা লাগাতার বৃষ্টির। যার জেরে প্রবল বন্যা আফগানিস্তানে (Afghanistan)। বন্যার প্রকোপে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪০০ মানুষ। সেদেশের তালিবান (Taliban) সরকার এমনটাই জানিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে বিপর্যস্ত কাবুলিওয়ালার দেশ।
গতকাল, মঙ্গলবার সকালেই প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে আফগানিস্তান। ২০০২ সালের পর এই প্রথম রিখটার স্কেলে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পের সাক্ষী থেকেছে দেশ। ইতিমধ্যে মৃতের সংখ্যা প্রায় হাজার ছুঁয়ে ফেলেছে। উদ্ধারকাজ শুরু হলেও অনেকেই ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন বলে খবর। এই অবস্থায় শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি। এর ফলে উদ্ধারকাজ প্রবল ভাবে ব্যাহত হয়েছে। আটকে পড়া আফগানদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। ক্রমশ প্রতিকূল হচ্ছে পরিস্থিতি। আফগান সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক হেদায়াতুল্লা পাক্তিন জানাচ্ছেন, আফগানিস্তানের ওই অঞ্চলগুলির সাধারণ মানুষ এতই দরিদ্র, তাঁরা মাটি, পাথর ও অন্যান্য উপাদান জড়ো করেই বাড়ি বানান। পাকা বাড়ি এখানে দুর্লভ। তাই ভূমিকম্পের ধাক্কায় সমস্ত বাড়িই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘কংগ্রেস, এনসিপির হাত ছাড়তে রাজি’, সুর নরম করে ‘বিদ্রোহী’দের ফিরে আসার আরজি সঞ্জয়ের]
মঙ্গলবার বিকেল থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। রাতে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়ে। এমনিতেই ভূমিকম্পের ধাক্কায় বহু জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। নেমেছে ধসও। তার মধ্যে বন্যার জল ঢুকে পড়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে। এমনিতেই তালিবান আমলের সেদেশের দারিদ্র চরমে পৌঁছেছে। এই অবস্থায় এমন ভূমিকম্প ও তার পরের বন্যায় জনজীবন প্রবল ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আফগান-পাক সীমান্তবর্তী খোস্ত শহর থেকে প্রায় ৪৪ কিলোমিটার দূরে ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। পাকতিয়া প্রদেশেই সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। যেহেতু ওখানে বেশির ভাগ বাড়িই কাঁচা বাড়ি, তাই ভূমিকম্পের ধাক্কায় ধসে পড়তে দেখা গিয়েছে বহু বাড়িকে। কার্যত ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে এলাকা। দেখা গিয়েছে কম্বলে জড়ানো শয়ে শয়ে মৃতদেহ। বাড়ি বলতে শুধু দেখা যাচ্ছে পাথরের ঢিপি। দেখতে দেখতে মনে হবে আফগানিস্তান যেন নরকে পরিণত হয়েছে। বৃষ্টির পরে পরিস্থিতি আরও ভয়কংর হয়ে যায়। সব মিলিয়ে সেদেশের ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ দুর্যোগের কবলে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে।