সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর বুধবার বিচারপতি কারনানকে গ্রেপ্তার করতে চেন্নাই পৌঁছে গিয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের একটি দল। সূত্রের খবর, তামিলনাডুতে নেই বিচারপতি কারনান। তিনি রয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকলাহস্তি নামের এক জায়গায়। আজ বিকেলে তাঁর চেন্নাই ফিরে আসার কথা।
[কৃষকদের জন্য সুখবর, সময়েই আসছে বর্ষা]
মঙ্গলবার, আদালত অবমাননার দায়ে তাঁকে ছ’মাসের কারাদণ্ডের সাজা শোনায় সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়াও প্রধান বিচারপতি জে এস খেহের-সহ সাত সদস্যের বেঞ্চ কারনানকে গ্রেপ্তার করতে ইতিমধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি-কেও নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে গত সোমবারই নিজের বাড়িতে বিশেষ কোর্ট বসিয়ে প্রধান বিচারপতি-সহ সাত বিচারপতির বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেছিলেন কারনান। প্রধান বিচারপতি খেহেরকে পাঁচ বছরের জেল এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানার সাজা শুনিয়েছিলেন তিনি। যদিও কারনানের এই রায়ের কোনও গুরুত্বই ছিল না। সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, কারনানের কোনও নির্দেশই কার্যকর হবে না। এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও জারি করা হয়েছিল। এছাড়া যাবতীয় বিচার প্রক্রিয়া থেকেও তাঁকে দূরে সরিয়ে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি গত ১ মে-র শুনানিতে শীর্ষ আদালত কারনানের মানসিক অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিল। তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষারও নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও সেই নির্দেশ মানেননি কারনান।
৪ মে কারনানের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন পাভলভ হাসপাতালের চার চিকিৎসক। কিন্তু তাঁদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ সঙ্গে ছিলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সদর) সুধাকরণ-সহ ২০ জন পুলিশ৷ ওই চিকিৎসকদের বিচারপতি কারনান স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন না। আর কারও মানসিক চিকিৎসা করতে গেলে আগে অভিভাবকদের সম্মতি লাগে৷ এভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো যায় না৷ আর বাড়িতেও কেউ নেই। তাই পরীক্ষাও করা যাবে না। এরপর সোমবার নিজের বাড়িতে কোর্ট বসিয়েই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে জেলের সাজা শোনান।
[ট্রাম্পের কোপে পড়ে পদ খোয়ালেন এফবিআই প্রধান]
প্রসঙ্গত, সি এস কারনান এবং সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে এই বিবাদ বহুদিন ধরেই চলছে। কারনানের একটি একটি নির্দেশ বারংবার দেশের বিচারব্যবস্থাকে বিড়ম্বনার সম্মুখীন করে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এস খেহেরের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদ্যস্যের এই বেঞ্চই বিচারপতি কারনানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার দায়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন৷ দেশের প্রায় ২০ জন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে লিপ্ত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন কারনান৷ এমনকী বিচারব্যবস্থা ও সরকারের কাজের সমালোচনা করে মাদ্রাজ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও আক্রমণাত্মক ভাষায় চিঠি লিখেছিলেন বিচারপতি কারনান৷ সেই চিঠি তিনি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে পাঠিয়েছিলেন৷ এরপরই সর্বসম্মতিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেছিল শীর্ষ আদালত৷ এই মামলার শুনানিতে একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বিচারপতি কারনানকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল৷ কিন্তু তিনি হননি। আর তারপরই কারনানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল।
উল্টোদিকে কারনানের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি দলিত বলে তাঁর সঙ্গে এরকম ব্যবহার করা হচ্ছে। নানাভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন তিনি। এরপরেই নিজেই বাড়িতে বিশেষ আদালত বসিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি-সহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা থেকে শুরু করে উড়ানে বিধিনিষেধ জারি করেন। শেষে জেলের সাজাও শোনান। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
[ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানো বন্ধ করুক পাকিস্তান, হুঁশিয়ারি মার্কিন রাজনীতিবিদের]
The post ‘সুপ্রিম’ নির্দেশে বিচারপতি কারনানকে গ্রেপ্তার করতে চেন্নাইয়ে পুলিশ appeared first on Sangbad Pratidin.