প্রসূন বিশ্বাস: বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর ‘পরিকল্পিত’ নির্যাতনের তীব্র বিরোধিতা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিল ইস্টবেঙ্গল। এর আগেই লাল-হলুদের তরফ থেকে এই নির্যাতনের নিন্দা করে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। তখনই আলোচনা চলছিল, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার ব্যাপারে। এবার সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিল ইস্টবেঙ্গল।
এর আগে ২ ডিসেম্বর একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয় লাল-হলুদের তরফ থেকে। সেখানে দীর্ঘ বক্তব্যে বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সেই সঙ্গে জানানো হয়, ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দীর্ঘ ইতিহাসে জাতির নামে হিংসা, অত্যাচারের প্রতিবাদে সর্বদা সরব। ক্লাবের অধিকাংশ সমর্থকের পূর্বপুরুষের শিকড় পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে। সেই প্রসঙ্গে উঠে এসেছিল দেশভাগের কথাও। এবার দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তারা চিঠি দিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও।
বিজ্ঞপ্তিতে ইস্টবেঙ্গলের তরফে বলা হয়েছিল, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করা আমাদের ক্লাবের সমর্থকদের গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। আমাদের সমর্থকদের অধিকাংশেরই পূর্বপুরুষের শিকড় পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে। আমাদের অনেক সমর্থকের পরিবার, আত্মীয়স্বজন দেশভাগের আগে এবং পরবর্তী সময়ে এবং '৬০-এর দশকের শেষের দিকে এবং '৭০-এর দশকের প্রথম দিকে এই ধরনের আক্রমণের শিকার হয়েছেন। আমরা তাদের থেকে প্রচুর ফোন এবং ই-মেইল পাচ্ছি, যেখানে তারা আমাদেরকে এই বিষয়টি যথাযথ জায়গায় উত্থাপন করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এমনকী আমাদের সমর্থকরা যারা পশ্চিমবঙ্গ এবং ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকে এসেছেন তারাও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছিল, “বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর এই ধরনের ব্যাপক নিপীড়ন বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা সকল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করতে চাই যে তারা যেন দয়া করে এই সমস্যাটিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সীমান্তের ওপারে আমাদের মা, বোন ও ভাইদের বাঁচাতে এবং শান্তি স্থাপন করতে দিশা দেখান।” এমনকী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুসকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি দিতে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে চরম আকার নিয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতন। অভিযোগ, বেছে বেছে রাষ্ট্রের মদতে আক্রমণ করা হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেল বাংলাদেশে হিন্দু ঐক্যজোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণকে জেলে বন্দি করে রেখেছে সে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পার বাংলায় হিন্দুদের উপর এই নির্যাতনে স্বাভাবিকভাবে ইস্টবেঙ্গল উদ্বিগ্ন। হাজার হাজার লাল-হলুদ সমর্থকদের পূর্বপুরুষ ওপারের বাসিন্দা। এমনকী এখনও বহু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকের আত্মীয় রয়েছেন বাংলাদেশে। তাদের কথা ভেবেই প্রতিবাদে ফের সরব শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাব।