সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আটের দশকে শহরে পা রেখেছিলেন মজিদ বাসকার ও জামশেদ নাসিরি। মহমেডান হয়ে লাল-হলুদ শিবিরে। বাকিটা ইতিহাস। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাচে যেন ঘরের ছেলে হয়ে গিয়েছিলেন দুই ইরানি ফুটবলার। পরে মজিদ দেশে ফিরে গেলেও জামশেদ নাসিরি এদেশেই থেকে যান। কলকাতাকে ভালবেসে। সেইপথেই হাঁটতে চলেছেন সিরিয়ার ফুটবলার মাহমুদ আল-আমনা। গৃহযুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত মধ্য প্রাচ্যের দেশ। সিরিয়ার কথা উঠলেই উদাস হয়ে যান আমনা। আইজল এফসি থেকে যখন গত বছর লাল-হলুদ শিবিরে এলেন, তখন থেকেই দলের নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। সমর্থকদের অকুণ্ঠ ভালবাসায় আপ্লুত তিনি। এবার এ শহরকে ভালবেসে ফেলেছে তাঁর দুই সন্তানও। রেতাজ ও তালিয়ান। একজন আট ও অন্যজন নয় বছরের। কিন্তু এদেশ ভাল লেগে গিয়েছে তাদের। এখানেই থাকতে চান তারা। তাই হিন্দি শিখছে দুজনে। রক্তাক্ত সিরিয়ায় ফিরতে চায় না তারা। তিলোত্তমাকেই আপন করে নিয়েছে দুই শিশুমন।
[আহত ইস্টবেঙ্গল সমর্থককে আর্থিক সাহায্য, পাশে দাঁড়ালেন সৃঞ্জয় বোস]
বাবা সিরীয় হলেও মা মিশরের বাসিন্দা। মায়ের মুখ থেকেই সিরিয়ার কথা শুনেছে দুজন। দামাস্কাস, ইদিলিবের নাম শুধু মুখেই শুনেছে তারা। চোখে দেখেনি রেতাজরা। দেখতে চায়ও না তারা। বাবার জন্মভূমিতে যেতেও চায় না তারা। ভালবেসে এদেশেই থাকতে চায় তারা। কলকাতাকে ভালবেসে ফেলেছে দুই বোন। স্কুলে দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে জার্মান, ফরাসি, স্প্যানিশ-সহ অন্যান্য বিদেশি ভাষা শেখার অবকাশ থাকলেও হিন্দিকে আপন করে নিয়েছে তালিয়ানরা। জোরকদমে চলছে হিন্দি শিক্ষা। ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির ‘চান্না মেরেয়া’ গান মনে ধরেছে তালিয়ানের। পড়াশোনার পাশাপাশি হিন্দি গান, ছবি দেখে মন খুশ তাদের। হিন্দি গানের কলি মুখে মুখে ঘোরে। বাবা আমনা বলেছেন, এখন ভারতে রয়েছেন বলে মেয়েরা যদি হিন্দি শেখে তা ওদের জন্য ভাল। দেশের অন্যত্র গেলে সবার সঙ্গে কথা বলতে পারবে তারা। সবার কথা বুঝতে পারবে দুই মেয়ে।
[মোহনবাগান দিবসে টুটু বোস শিবিরের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে চান অঞ্জন মিত্র]
হয়তো আজীবন কলকাতায় থাকবেন না আমনা ও তাঁর পরিবার। কিন্তু কলকাতাকে মনে থাকবে। একসময় মজিদদের আপন করে নিয়েছিল এ শহর। এখনও ইরানি ফুটবলারের পায়ের জাদু মনে রেখেছে ময়দান। আমনার দুই মেয়ের কলকাতা প্রেম যেন অটুট থাকে চাইছে শহরবাসী।
The post মনে ধরেছে এই দেশ, হিন্দি শিখছে আমনার দুই মেয়ে appeared first on Sangbad Pratidin.