সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একেই বলে আপনি বাঁচলে বাপের নাম। ফি বছর দীপাবলি কাটলেই ধোঁয়া আর কুয়াশার সাঁড়াশি আক্রমণে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয় দিল্লিবাসীর। দুইয়ে মিলে যাকে বলা হয় ধোঁয়াশা। চেনা সেই ‘শত্রু’র হাত থেকে পরিবেশ, থুড়ি নিজেদের বাঁচাতে এক অনন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিকাংশ দিল্লিবাসী। ঠিক করেছেন এবারের দিওয়ালিতে আর বাজি পোড়াবেন না।
দীপাবলির ঠিক ১২ দিন আগে এক সমীক্ষায় দূষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল পরিবেশমন্ত্রক। সেই সময়ই এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স তিনশোর ঘর পার করে চলে গিয়েছিল ‘অতি খারাপ’-এর ঘরে। তখন থেকেই আধিকারিকদের কপালে ভাঁজ দেখা গিয়েছিল যে দিওয়ালির সময় তাহলে কী হবে! এই চিন্তা থেকেই দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার নাগরিকদের উপর সমীক্ষা চালায় লোকাল সার্কেলস ফাউন্ড নামে একটি বেসরকারি সংগঠন। দিল্লি ও তৎসলগ্ন অঞ্চলের প্রায় ৬৫ হাজার বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে তারা। সেখান থেকেই যে তথ্য উঠে এসেছে, তা যদি বাস্তবে পরিণত হয়, তাহলে মঙ্গল রাজধানীবাসীর।
[আরও পড়ুন: ছেলে জোটে আসতেই গারদের বাইরে বাবা, তিহার জেল থেকে মুক্ত অজয় চৌটালা ]
এই ৬৫ হাজার মানুষের প্রায় ৬৪ শতাংশ জানিয়েছেন, পরিবেশকে বাঁচাতে ও নিজেরা সুস্থ থাকতে এবার দিওয়ালিতে তাঁরা বাজি পোড়াবেন না। আর বাকি ৩৬ শতাংশের মধ্যে সাত শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়াবেন। এবং বাকি দশ শতাংশের বক্তব্য, অন্যবার যে ধরনের বাজি ফাটান, সেই ধরনের বাজিও এবার ফাটাবেন। এবং ১৮ শতাংশ মানুষ সওয়াল করেছেন আতশবাজির পক্ষে। এমনিতেই শব্দ ও দূষণের মাত্রা বেঁধে দেওয়া বাজির কালোবাজারি রুখতে অত্যন্ত তৎপর স্থানীয় প্রশাসন। কলকাতার পাড়ায় পাড়ায় যেমন এই সময় বাজি বিক্রি হয়, দিল্লিতে কিন্তু সেই ছবি একেবারেই নেই। বাজি বাজারগুলি ছাড়া অন্য আর কোথাওই সেভাবে বাজি পাওয়া যাচ্ছে না।
‘অভিজ্ঞ’দের পরিবেশ সচেতনতার পাঠ দিতে আসরে নেমেছে দিল্লির কচিকাঁচারাও। ‘নিজের অহংকারকে জ্বালাও। বাজি নয়’ এই বার্তা দিয়ে বিভিন্ন স্কুলের পক্ষ থেকে এদিন ছাত্রছাত্রীরা মুখে মাস্ক পরে রাস্তায় ছোট ছোট মিছিল করে। দিওয়ালি উপলক্ষে, দিল্লি জুড়ে পড়েছে গিফট কেনার ধুম। বিভিন্ন দোকানের সামনে প্যান্ডেল খাটিয়ে করা হয়েছে অস্থায়ী দোকানও। মনোজ শুক্লা নামে এক ব্যক্তি বলেন, “আজ থেকে পাঁচ বছর আগে মানুষ এয়ার পিউরিফায়ারের দিকে ঘুরেও তাকাত না। অথচ কাল আর আজ মিলিয়ে প্রায় কুড়ি-তিরিশটি বিক্রি হয়েছে।”
অন্যদিকে, দিল্লির এক শোরুমের ম্যানেজার মোহন শর্মা বলছেন, “অন্য সময় মাসে গড়ে ২৫ থেকে ৪০টি এপি বিক্রি হয়। তবে এই দিওয়ালিতে আমরা একশোর উপর বিক্রি করে ফেলেছি। দেওয়ালির পর বিক্রি আরও বাড়বে। তখন ধোঁয়াশা বাড়বে, মানুষও ঝুঁকি না নিয়ে বেশি করে এপি কিনবে।”
[আরও পড়ুন: তিন দশকে প্রথম, সঞ্চিত সোনা বেচে লাভের টাকা কেন্দ্রকে দিচ্ছে রিজার্ভ ব্যাংক ]
The post বাতাসে বিষ, বাঁচার তাগিদে বাজি বয়কট দিল্লিবাসীদের appeared first on Sangbad Pratidin.