সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের (Australian Journalist) ভারত ছাড়ার ঘটনায় এবার মুখ খুলল কেন্দ্র। মঙ্গলবার অবনী ডায়াস নামের ওই সাংবাদিক দাবি করেন, মোদি সরকার তাঁর ভিসার মেয়াদ বাড়ায়নি। আর সেই কারণেই বাধ্যত ভারতছাড়া হতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিল কেন্দ্র। দাবি করল, ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা নয়, ব্যক্তিগত কারণেই উনি ভারত ছেড়েছেন।
মঙ্গলবারই সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অবনী দাবি করেন, ভারত সরকার তাঁর ভিসার মেয়াদ বাড়ায়নি। আর তাই দেশ থেকে চলে যেতে হয়েছে তাঁকে। যদিও তাঁর সেই মন্তব্যের পালটা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিক জানালেন, ''এই অভিযোগ সঠিক নয়। ওই সাংবাদিককে দেশের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে কাজ করার অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। তার পরও ওই সাংবাদিক ভারত ছেড়ে চলে গিয়েছেন। কারণ, অস্ট্রেলিয়াতে উনি অন্য ভালো চাকরি পেয়েছেন। তাই ভিসার মেয়াদ বাড়ানোটা কোনও কারণ নয়, বরং ব্যক্তিগত কারণে উনি ভারত ছেড়েছেন।"
[আরও পড়ুন: ইলেক্টোরাল বন্ড ‘কেলেঙ্কারি’র তদন্তে SIT গঠনের দাবি, মামলা সুপ্রিম কোর্টে]
২০২২ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ভারতে কাজ করছিলেন অস্ট্রেলিয়ার এবিসি নিউজের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরোর প্রধান। তবে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ভারত ছাড়েন ওই সাংবাদিক। এর পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে সোশাল মিডিয়ায় সরব হন অবনী। অভিযোগ করেন, "গত সপ্তাহে হঠাৎ করে আমাকে ভারত ছাড়তে হয়। খলিস্তানি নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমাদের তথ্যচিত্র সীমা অতিক্রম করেছে, কার্যত এই অভিযোগেই ভারত ছাড়তে বাধ্য করা হয় আমাকে।" সাংবাদিকের আরও অভিযোগ, "লোকসভা নির্বাচনে সাংবাদিকতা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি আমাকে। নরেন্দ্র মোদি ভারতকে 'গণতন্ত্রের জননী' বলেন। সেই নির্বাচনের একদিন আগেই মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিসে আমাকে চলে আসতে হয়েছে।"
[আরও পড়ুন: ‘একসঙ্গে বাঁচতে চেয়েছিলাম, একসঙ্গে মরলাম’, দুর্ঘটনায় স্ত্রীর মৃত্যুর পরদিনই আত্মঘাতী স্বামী]
অবনির দাবি অনুযায়ী, ঘটনার সূত্রপাত গত বছর। হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে একটি তথ্যচিত্র সোশাল মিডিয়ায় তুলে ধরা হয়েছিল অবনীর তরফে। এর পর গত ২৪ মার্চ ইউটিউব থেকে একটি বার্তা আসে। যেখানে বলা হয়, ভারত সরকারের নির্দেশ এই তথ্যচিত্র ব্লক করা হয়েছে। এর পর এবিসি নিউজের তরফে অভিযোগ করা হয়, তাদের একাধিক সাংবাদিককে পাঞ্জাবে গোয়েন্দাদের তরফে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভারত-পাক সীমান্তে দুই দেশের উদ্যোগে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে কভারেজের অনুমতি দেওয়া হয়নি তাদের।
তবে এবিসির সাংবাদিকের সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ভারত সরকারের তরফে জানানো হয়, 'শিখস মার্ডার অ্যান্ড স্পাইজ' নামের ওই তথ্যচিত্র গত ২১ মার্চ সম্প্রচার করা হয়েছিল। কোনওরকম অনুমতি ছাড়াই ওই ভিডিও শুট করা হয়। এছাড়া ওয়াঘা সীমান্তে শুটিংয়ের অনুমতি বাতিল প্রসঙ্গেও ভারত সরকার জানায়, নিরাপত্তা সংক্রান্ত কারণে বিএসএফের তরফে অনুমতি দেওয়া হয়নি।