স্টাফ রিপোর্টার, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: তবলিঘি জামাতের ১৯ বাংলাদেশিকে কেন্দ্রের নির্দেশেই পুলিশি নিরাপত্তায় পেট্রাপোল সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিল রাজ্য। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার জানালেন, নিজামুদ্দিনের জমায়েতে হাজির ১০৮ জন বিদেশি নাগরিক বাংলায় এসেছিলেন, এঁদের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে প্রতি মুহূর্তে দিল্লির স্বরাষ্ট্র ও বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। যখনই সবুজ সংকেত আসে, তার পরই দু’টি দেশের নাগরিকদের পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এদিনই দিল্লির নিজামুদ্দিনে জমায়েতে হাজির হওয়া প্রায় ২,২০০ জন বিদেশি সদস্যের দশ বছরের জন্য ভারতে আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্র। এঁদের বিরুদ্ধে মূলত লকডাউনের বিধি লঙ্ঘন, টুরিস্ট ভিসায় এসে ধর্মীয় কার্যকলাপে জড়িত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই জমায়েতে হাজির অনেকেরই করোনা রিপোর্ট পজিটিভ হয়। দেশের বিভিন্ন অংশে এঁরা ছড়িয়ে পড়তেই আচমকা বেড়ে গিয়েছিল সংক্রমণ। কিন্তু এত বিদেশি কীভাবে জড়ো হয়েছিলেন, সে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রাজ্যে যে ১০৮ জন বিদেশি নাগরিক এসেছিলেন, তাঁদের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারেই রাখা হয়েছিল। নবান্নের তরফে প্রতিনিয়ত নিয়মমাফিক যোগাযোগও রাখা হয়েছে। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব স্পষ্ট করেন যে, সবটাই হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশ ও নিয়মমাফিক। রাজ্যের বক্তব্য, একটি দেশের ২৪ জনকে গয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর অবশ্য ওঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। ১৯ জন বাংলাদেশির ক্ষেত্রেও ২৮ মে দিল্লি থেকে জানানো হয়, পুলিশি এসকর্টে বাংলাদেশেই ফেরত পাঠাতে হবে। সেই মতোই পেট্রাপোলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর ওঁদের কেন্দ্রের এজেন্সির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এখন রাজারহাটের হজ হাউসের কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছে ওঁদের। তবলিঘি জমায়েতের কারও কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট ছিল না। ফৌজদারি অপরাধের ইতিহাসও খতিয়ে দেখা হয়েছিল, জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে ফিরছেন হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক, বেকারত্বের নিরিখে কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলা?]
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের স্পষ্ট বক্তব্য, “দিল্লির কাছে প্রতি মুহূর্তে নির্দেশ চাওয়া হয়েছে। যা সিদ্ধান্ত সবটা নিয়ম ও নির্দেশ মেনে। কোনও ধোঁয়াশা নেই।” এদিন তাঁর বাংলোয় সাংবাদিক সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রসচিব রীতিমতো দুই মন্ত্রকের আধিকারিকদের চিঠির নথিও তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজে অনুষ্ঠিত হয় তবলিঘি জামাতের ধর্মীয় অনুষ্ঠান। তাতে যোগ দিতে আসেন বহু বিদেশি সদস্য। লকডাউনের সময় এই অনুষ্ঠানে তাঁরা জমায়েতও করেন। এই অভিযোগে এপ্রিল মাসেই প্রায় ৯৬০ জন বিদেশি তবলিঘি জামাত সদস্যকে ব্ল্যাক লিস্ট করে কেন্দ্র। অনেককেই আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, মালয়েশিয়ায় ফেরতও পাঠানো হয়। সেই সংখ্যাই এদিন বেড়ে হয় ২,২০০।
[আরও পড়ুন: ‘মাথার উপর ক্যাপ্টেন আছেন, বাংলা জিতবেই’, আমফান বিধ্বস্ত বসিরহাট ঘুরে মন্তব্য শুভেন্দুর]
The post বাংলাদেশি তবলিঘি সদস্যদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের নির্দেশেই, সাফ জানাল রাজ্য appeared first on Sangbad Pratidin.