কৃশানু মজুমদার: ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর (Cristiano Ronaldo) পর্তুগাল ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের টিকিট জোগাড় করল। একই দিনে কপাল পুড়ল রোনাল্ডোর প্রাক্তন কোচের।
তিনি কার্লোস কিরোজ (Carlos Queiroz)। ২০১০ বিশ্বকাপে তাঁর হাতেই ছিল পর্তুগালের রিমোট কন্ট্রোল। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে আবার গুরু ও শিষ্য একে অপরের বিরুদ্ধে মুখোমুখি হয়েছিল। কিরোজ তখন ইরানের কোচ। ‘গুরু’ কিরোজ এখন সালাহদের হেডমাস্টার। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপে (Qatar World Cup 2022) শিষ্য রোনাল্ডোকে দেখা গেলেও থাকবেন না কার্লোস কিরোজ। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জনকারী (World Cup Qualifier) পর্বের ম্যাচে সেনেগালের কাছে হেরে কাতারের টিকিট জোগাড় করতে পারেনি মিশর।
[আরও পড়ুন: কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর, আইপিএলের প্লে-অফের ম্যাচ পাচ্ছে ইডেন!]
পিরামিডের দেশে নেমে এসেছে শোক। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন কোচ ফ্রানসিসকো ব্রুটো দ্য কোস্টা এখন সালাহর দেশে ফুটবল নিয়ে কাজ করছেন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে কায়রো থেকে তিনি বলছিলেন, ”এটাই ফুটবল। এটাই জীবন। আমি বলব না মিশর হেরে গিয়েছে। ঘরের মাঠে সেনেগালকে হারিয়েছিল মিশর। আবার সেনেগালে গিয়ে মিশর এক গোলে হেরে যায়। এগ্রিগেটে ১-১ হওয়ায় ম্যাচের নিষ্পত্তি হয় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকারে যে কোনও দলই জিততে পারে। এটাই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে মিশর ঢলে পড়ল পরাজয়ের কোলে।”
কিরোজের সঙ্গে কোস্টা
বছর দুই আগে মোহনবাগান দিবসের দিন কোস্টার নাম কোচ হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে লাল-হলুদের সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে নেলো ভিনগাদার ডাকে সাড়া দিয়ে মিশরে চলে আসেন দ্য কোস্টা। আইএসএলের দল কেরল ব্লাস্টার্স, নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের প্রাক্তন কোচ নেলো ভিনগাদা মিশর ফুটবল সংস্থার স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজর এবং টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। ভিনগাদার প্রস্তাবেই মিশরে যান কোস্টা। ভিনগাদাকে কাজে সাহায্য করেন তিনি। বলা ভাল, ভিনগাদার সহকারী কোস্টা। ভিনগাদা যেখানে কোস্টাকে অ্যাসাইনমেন্টে পাঠান, সেখানেই যান প্রাক্তন লাল-হলুদ কোচ।
এদিন কোস্টা বলছিলেন, ”লাইবেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে মিশর জাতীয় দলের সঙ্গে গিয়েছিলাম। এর পরে লিবিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের যোগ্যতাপর্বের ম্যাচেও দলের সঙ্গে ছিলাম। খুব কাছ থেকে দেখেছি কিরোজ, ভিনগাদাকে। কিরোজ নিজের কাজ সম্পর্কে খুব যত্নবান। অনেক আগে থেকেই হোমওয়ার্ক করে রাখেন প্রতিপক্ষ নিয়ে। তিনি যে কতটা গোছানো, তা দলের খেলা দেখলেই বোঝা যায়।”
বিশ্বকাপের যোগ্যতা পর্বের ম্যাচে লড়াইটা ছিল মিশর বনাম সেনেগালের। কিন্তু লড়াইটা যে ছিল লিভারপুলের দুই সতীর্থ সাদিও মানে ও সালাহরও। শেষ হাসি তোলা থাকল সাদিও মানের জন্য। আর দুঃসংবাদ আসতেই শোকের ছায়া নামল মিশরে। কোস্টা বলছিলেন, ”এত কাছে এসেও বিশ্বকাপের টিকিট না পাওয়ায় দুঃখ তো হবেই। এখানে ফুটবল নিয়ে প্যাশনেট সবাই। ফলে বুঝতেই পারছেন বিশ্বকাপে না যাওয়ায় কতটা দুঃখ পেয়েছেন ফুটবলভক্তরা। তবে আবারও বলছি, ছেলেরা নিজেদের সেরাটাই দিয়েছে।”
রাশিয়া বিশ্বকাপে নামার আগে সের্জিও র্যামোসের বিশ্রী ফাউলে হাত ভেঙেছিল সালাহর। বিশ্বকাপে তিনি খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ ছিল। শেষমেশ সালাহ নামেন রাশিয়ায়। তবে উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নামেননি বাঁ পায়ের তারকা সালাহ। পরে দলের প্রয়োজনে তাঁকে নামানো হলেও মিশর কিন্তু গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল।
এবার খুব কাছে এসেও অনেক দূরে মিশর। আবার আগামী চার বছরের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই। কোস্টা বলছেন, ”ওয়ার্ক কন্টিনিউস। কাজ চলতেই থাকবে। আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস রয়েছে। সামনের দিকে তাকাতে হবে।” এক স্বপ্ন শেষ। নতুন স্বপ্নের খোঁজে মিশর।
[আরও পড়ুন: আইপিএলে আজ কোহলি-শ্রেয়স দ্বৈরথ, কেকেআর শিবিরে একটি পরিবর্তনের সম্ভাবনা]