শিলাজিৎ সরকার: ১৯ বছর পর ফের ডুরান্ড কাপ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল আর মোহনবাগান। প্রায় দু’দশক আগে শেষবার ইস্ট-মোহনের খেতাবি লড়াইয়ে নায়ক হয়েছিলেন সেই ম্যাচের অধিনায়ক চন্দন দাস। সমর্থকদের নিরাশ করেননি চন্দন। জোড়া গোল করে ট্রফি লাল-হলুদ তাঁবুতে নিয়ে আসার কাণ্ডারি তিনিই।
সেবারের মতো এবারেও ফাইনালের আগে ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal) পরিস্থিতির মধ্যে মিল পাচ্ছেন চন্দন। বলছিলেন, “এবার খাতায়-কলমে সবাই ইস্টবেঙ্গলকে পিছিয়ে রাখছে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। মোহনবাগানে জাতীয় দলের এতজন ফুটবলার আছে। সঙ্গে বিশ্বকাপ, ইউরো খেলা বিদেশি। ২০০৪ সালেও কিন্তু পরিস্থিতি এমনই ছিল।” কী পরিস্থিতিতে ইস্টবেঙ্গল ছিল সেবার? “ভাঙা দল নিয়ে ডুরান্ড খেলতে দিল্লি গিয়েছিলাম। কোচ সুভাষ ভৌমিক গিয়েছিলেন ফাইনালের আগে। প্রথম দলের একাধিক সদস্য ছিল না। এমনকী ফাইনালেও মাত্র ১৩ জনই খেলার মতো অবস্থায় ছিল। আমরা তিন পরিবর্তের সুবিধা নিতে পারিনি যে জন্য। একটা আত্মঘাতী গোলও হজম করতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, মাধব (দাস) লাল কার্ড দেখায় অনেকক্ষণ ১০ জনে খেলেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছিলাম,” বলছিলেন তৃপ্ত চন্দন।
[আরও পড়ুন: বাড়বে ইডি-সিবিআইয়ের ‘অত্যাচার’, গ্রেপ্তারির জন্য তৈরি থাকুন, INDIA নেতাদের সতর্কবার্তা খাড়গের]
আম্বেদকর স্টেডিয়ামে সেবারের ডুরান্ড ফাইনালে ৯০ মিনিট পর্যন্ত ১-১ ছিল ম্যাচ। শেষে সংযুক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ফের গোল করে ট্রফি জেতান চন্দন। স্মৃতিচারণার ফাঁকে বলছিলেন, “ক্লাইম্যাক্সকে (লরেন্স) পাস দিয়ে আমি বক্সে ঢুকে পড়েছিলাম। কিন্তু যেখানে আমি ছিলাম, সেখান থেকে গোল সাধারণত হয় না। তাও একটা শট নিয়েছিলাম। মারার পর বুঝেছিলাম, গোলটা হবে।” কোন মন্ত্রে সেবার বাজিমাত করেছিল ইস্টবেঙ্গল? এবারই বা কীভাবে মোহনবাগানকে টেক্কা দিতে পারে লাল-হলুদ শিবির? চন্দনের বক্তব্য, জার্সির রংয়েই লুকিয়ে আছে লড়াইয়ের বীজ। বললেন, “সেবার সবাই ভেবেছিল মোহনবাগান জিতবে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়িনি। আসলে লড়াইটা ইস্টবেঙ্গলের নাম আর জার্সির মধ্যেই আছে। ওটাই আন্ডারডগ থেকে আমাদের চ্যাম্পিয়ন করেছিল। আশা করছি, এবারও তেমন কিছু হবে।”
শক্তিশালী মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এবারও ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে রাখছেন চন্দন। তাঁর কথায়, “এবার লাল-হলুদ ফুটবলারদের মধ্যে একটা হাল না ছাড়া মনোভাব আছে। কার্লেস কুয়াদ্রাতও দলটাকে গুছিয়ে নিয়েছেন। সবাই দলের জন্য, একে অপরের জন্য প্রাণও দিতে পারে। সেখানে মোহনবাগানে বড় নাম থাকলেও ওরা এখনও একটা দল হয়ে উঠতে পারেনি।” এখানেই লাল-হলুদ টেক্কা দেবে রবিবাসরীয় সন্ধ্যায়, আশাবাদী চন্দন।