সৌরভ মাজি, বর্ধমান: হেয়ার স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দেবীপুর এলাকায় নিজের বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পরিবারের দাবি, অবসরের পর তিন বছর কেটে গেলেও মেলেনি পেনশন। অবসাদে ভুগছিলেন প্রধান শিক্ষক। তার জেরে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই দাবি। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
মৃত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম সুধীর দাস। ষাটোর্ধ্ব সুধীরবাবু কলকাতার হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে বাড়ির ভিতরে পরিবারের লোকজন তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় মেমারি থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। মৃতের ছেলে সমীরণ দাসের দাবি, “২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে অবসর নেন। সে বছর শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিতও হন তিনি। তারপর থেকে অনেক চেষ্টা করেও তাঁর পেনশন চালু হয়নি। পেনশনের জন্য তিনি বারবার কলকাতা ছোটাছুটি করতেন।” মৃতের দাদা শংকর দাসের দাবি, অবসরের পরেই লকডাউন শুরু হয়ে যায়। সেই কারণেই পেনশন চালু হয়নি। এই নিয়ে ভাইকে চিন্তিত থাকতে দেখা যেত। পেনশন চালু না হওয়ায় মানসিক অবসাদের কারণেই আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: টুইটারে ভিন্নমতাবলম্বীদের অনুসরণের ‘অপরাধ!’ ৩৪ বছরের জেল সৌদি তরুণীকে]
এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। বিজেপি এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব বিজেপি। শিক্ষারত্নপ্রাপ্ত এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে কেন মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করতে হল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পদ্মশিবির। তোলা দেননি বলেই ওই শিক্ষক পেনশন পাননি বলেও অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। তবে তৃণমূল বিজেপির অভিযোগকে কার্যত খারিজ করে দিয়েছে।
সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, কোনও নথি সংক্রান্ত জটিলতায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হয়তো পেনশন পেতেন না। তা খতিয়ে দেখতে হবে। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের আপদকালীন পেনশন চালু হয়েছিল গত বছর জানুয়ারি মাসে। তা সত্ত্বেও আমি ২ সদস্যের কমিটি গঠন করলাম। তারা তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট দেবে। আপদকালীন পেনশন কবে চালু হয়েছিল? তিনি পেতেন কিনা? সে সংক্রান্ত তথ্য জানাবে ওই কমিটি।”