shono
Advertisement

আকস্মিক প্রয়াণ তিন প্রধানে খেলা চিবুজোরের, শোকের ছায়া কলকাতা ময়দানে

পিএসভি আইন্ডহোভেনের বিরুদ্ধে গোল ছিল চিবুজোরের।
Posted: 04:14 PM Apr 08, 2022Updated: 05:45 PM Apr 08, 2022

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৯১-৯২ ফুটবল মরশুমে হল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাব পিএসভি আইন্ডহোভেন খেলতে এসেছিল এদেশে। বিশ্ববিখ্যাত ডাচ দলটির গোল আগলানোর দায়িত্বে ছিলেন ভ্যান ব্রুকলিন। পিএসভি-র কোচ ববি রবিসন। রোমানিয়ার হয়ে বিশ্বকাপ খেলা পপেস্কু মাঝমাঠে। রুড গুলিট-ভ্যান বাস্তেনদের সতীর্থ রোনাল্ড কোম্যানের দাদা এরউইন কোম্যান তখন পিএসভি-তে। শক্তিশালী এই পিএসভির বিরুদ্ধে ম্যাচে একটি গোল করেছিলেন চিবুজোর (Chibu Eze)। আইএফএ একাদশের হয়ে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ওই ম্যাচে নেমেছিলেন তিনি। চিবুজোরের বাঁকানো শটটার জোর এতটাই ছিল যে ব্রুকলিন বলটা গ্রিপই করতে পারেননি। সরাসরি তা পিএসভির জালে জড়িয়ে যায়।

Advertisement

সেই চিবুজোর (Chibu Eze) আর নেই। শুক্রবার প্রাতঃভ্রমণ সেরে বাড়িতে ফেরার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন চিবু। অচৈতন্য হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। বিশ্বকাপার নাইজেরিয়ান এমেকা এজুগো ফেসবুকে চিবুজোরের মৃত্যুর খবর দেন। এমেকা লেখেন, ”ভাই এবং সুন্দর এই খেলাটার একজন প্রিয় বন্ধুকে আমি আজ হারালাম। ভারতীয় ফুটবল তার একজন আইকনকে হারাল। আমি এখনও এই শোক কাটিয়ে উঠতে পারিনি। আমার পরিবারের থেকেও বড় আপন ছিল চিবু। আমার ভাইয়ের থেকেও বড় ছিল ও। আমি কাঁদছি। তবে চোখে নেই জলের ধারা। আমি ভেঙে পড়েছি এটা বললেও খুব কম বলা হবে।”  

[আরও পড়ুন: ‘১৬তলা থেকে ঝুলিয়ে দিয়েছিল, অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি’, প্রাক্তন সতীর্থের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক চাহাল]

একসময়ে কলকাতা ময়দানে একসঙ্গে উচ্চারিত হত চিমা-এমেকা-চিবুজোরের নাম। ১৯৮৬ সালে ইস্টবেঙ্গলে (East Bengal) খেলতে এসেছিলেন চিবুজোর। দু’ দফায় খেলেছেন লাল-হলুদে। ১৯৯৩ সালে মোহনবাগানের (Mohun Bagan) হয়ে খেলেছিলেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার। সবুজ-মেরুন জার্সিতে তাঁর সতীর্থ ছিলেন বার্নার্ড, ক্রিস্টোফারও। মহামেডান স্পোর্টিংয়ের (Mohammedan SC) সাদা-কালো জার্সি পরে সবুজ ঘাসে লিখেছিলেন রূপকথা। দ্রুতগতির স্ট্রাইকার ছিলেন নাইজেরীয় চিবুজোর। সেই সঙ্গে তাঁর শরীর ছিল খুবই নমনীয়। গোল করার পরে অদ্ভুত স্টাইলে ডিগবাজি দিতেন। সতীর্থ বাঙালি ফুটবলারদের সঙ্গে দারুণ ভাবে মিশে যেতে পারতেন।

এশিয়ান অল-স্টার খ্যাত গোলকিপার অতনু ভট্টাচার্য বলছিলেন, ”চিবুজোরের সঙ্গে গতকাল পর্যন্তও আমাদের যোগাযোগ ছিল। নাইজেরিয়ান ফুটবলারদের মধ্যে একমাত্র চিবুজোরের সঙ্গেই আমাদের দারুণ বন্ধুত্ব ছিল। ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ দলের কোচ ওকে নিয়ে ভাবত। বড় ম্যাচে অনেক গোল রয়েছে চিবুজোরের।”

ফুটবল ছাড়ার পরে পাদ্রী হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন কলকাতায় খেলার সুবাদে বাংলা ভাষা শিখে ফেলেছিলেন। মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে যখন খেলতেন তখন তাঁর সতীর্থ ছিলেন ক্রিস্টোফার। ক্রিস্টোফার অনেক আগেই এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। এবার চলে গেলেন তাঁর বন্ধু চিবুজোরও। রূপকথায় মোড়া কলকাতা ফুটবলে এখন বিষণ্ণতার ছোঁয়া।  

 

[আরও পড়ুন: ভেঙে পড়েছে অর্থনীতি, কাঁদছে জন্মভূমি, দেশের হাল দেখে চোখে জল শ্রীলঙ্কার ‘বাঙালি’ কোচের]

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement