সুকুমার সরকার, ঢাকা: প্রয়াত বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ। শনিবার সকালে রাজধানী ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
[আরও পড়ুন: ফের মৌলবাদীদের হামলার নিশানায় ঢাকার ইসকন মন্দির, চলল মারধর, লুটপাট]
১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ছিলেন শাহাবুদ্দিন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামি লিগ ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রপতি পদে বসেন তিনি। ২০০১ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব থেকে অবসর নেন শাহাবুদ্দিন। তারপর থেকে সেই অর্থে রাজনীতির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি তিনি। গুলশানের বাসভবনে অনেকটা নিভৃত জীবন যাপন করছিলেন শাহাবুদ্দিন আহমেদ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধ্যক্যজনিত বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে, শাহাবুদ্দিনের জামাতা অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মহম্মদ আলি মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে মৃত্যু হয় বলে তিনি জানতে পেরেছেন। জানা গিয়েছে, শাহাবুদ্দিন আহমেদের দুই ছেলে গুলশানের বাড়িতেই বাবার সঙ্গেই থাকেন। তাঁর দুই মেয়ে বর্তমানে আমেরিকা ও ব্রিটেনে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের আন্দোলনে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে আসেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমদ। এরশাদ পদত্যাগ করার পর রাষ্ট্রপতির পদে কে বসবেন, নির্বাচন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে থাকবেন- সেই প্রশ্নে আওয়ামি লিগ, বিএনপি-সহ গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলো (তিন জোট) একমত হতে পারছিল না। পরে প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিনকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসে আওয়ামি লিগ। তারপর শাসক দলের প্রার্থী হিসেবে সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন শাহাবুদ্দিন আহমেদ। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান শাহাবুদ্দিন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমেদ। তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন আমেরিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।