ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন আগেই। বুধবার বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তাফা দিয়েছেন। এবার বৃহস্পতিবার তৃণমূলের সমস্ত পদ ছাড়লেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। অর্থাৎ এদিন দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্কই ছিন্ন করলেন তিনি।
এদিন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তাফাপত্র পাঠান। তাতে তিনি লেখেন, “তৃণমূল (TMC) ও দলীয় সমস্ত সংগঠনের সমস্ত পদ থেকে ইস্তাফা দিলাম। এতদিন দলের জন্য কাজের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ দেওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।” তাঁর এই পদত্যাগপত্র এখনও গ্রহণ করেনি তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, তিনি তৃণমূলের ২০ সদস্যের রাজ্য কমিটির সদস্যের পাশাপাশি সাত সদস্যের কোর কমিটিরও সদস্য ছিলেন শুভেন্দু। এছাড়াও WBPTCC-এর সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন : কাঁথিতে শুভেন্দু অধিকারীর সহায়তা কেন্দ্র ‘দখল’ করল তৃণমূল, মোছা হল গেরুয়া রং]
তৃণমূলের এই প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। অনেকেই বলছেন, গেরুয়া শিবিরে তাঁর যোগদান এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সেই জল্পনা এদিন আরও একধাপ বাড়িয়ে দিলেন আরেক তৃণমূল বিধায়ক জীতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি সংবাদ সংস্থা এএননআইকে জানিয়েছেন, দ্রুত বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন শুভেন্দু।
বিধায়ক হিসেবে শুভেন্দুর যাত্রা শুরু ২০০৬ সালে। সে বছর তিনি কাঁথি দক্ষিণ থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। ঠিক পরের বছর থেকে অর্থাৎ ২০০৭ সাল থেকে নন্দীগ্রামে কৃষিজমিতে শিল্পস্থাপন নিয়ে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের বিরোধিতায় আন্দোলনে নামেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কৃষকদের পক্ষে লড়াই করেছেন মেদিনীপুরের ভূমিপুত্র। এরপর ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে পরপর দু’বার শুভেন্দু তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন : পদত্যাগ করেই কাঁকসায় বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শুভেন্দুর, তুঙ্গে জল্পনা]
২০১৬ সালে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক হন এবং রাজ্যের মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পান। কিন্তু সম্প্রতি একাধিক কারণে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল। নভেম্বরের ২৭ তারিখ মন্ত্রিত্ব ছাড়েন শুভেন্দু অধিকারী। তার আগেই ছেড়ে দিয়েছিলেন HRBC’র চেয়ারম্যান পদ, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ এবং সমবায় ব্যাংকের দায়িত্ব। এরপর মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বিধায়ক ও দলের সমস্ত পদ থেকেই ইস্তাফা দিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, বিধায়কপদ থেকে তাঁর পদত্যাগের চিঠি এখনও গ্রহণ করেননি বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি জানিয়েছেন. ওই পদত্যাগপত্র পেয়েছি। খুঁটিয়ে তা দেখা হচ্ছে। তাই এখনই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে বা বাতিল হয়েছে, তা বলা ঠিক হবে না।