সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সর্বজনীন থেকে বিশ্বজনীন। বাঙালির চিরন্তন মহোৎসব দুর্গাপুজো (Durgapuja) এভাবেই এগিয়েছে বিশ্বের দরবারে। দশমীতে নিছক গঙ্গার ঘাটে প্রতিমা বিসর্জনে বিষণ্ণ আবহকে বদলে দিতে রাজ্য সরকার চালু করেছে কার্নিভ্যাল। রেড রোডে ধরে ওইদিন সমস্ত বিখ্যাত প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় লাইন ধরে। এক উৎসব শেষে সে যেন আরেক উৎসবের মেজাজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) মস্তিষ্কপ্রসূত সেই বিসর্জন কার্নিভ্যালের মধ্যে দিয়েই দুর্গাপুজো আরও খানিকটা আন্তর্জাতিক পরিচিতি পেয়েছে। এর স্বীকৃতিও মিলেছে। ইউনেস্কো (UNESCO) বাংলার দুর্গাপুজোকে ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজ’ তকমা দিয়েছে। শুক্রবার ভিক্টোরিয়ায় কেন্দ্রের তরফে সেই উপলক্ষেই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমন্ত্রিত নন বাংলার কেউ। যে প্রশাসনের কল্যাণে দুর্গাপুজোর এই স্বীকৃতি, তাদের উপেক্ষা করে অনুষ্ঠান নিয়ে ক্ষুব্ধ পুজো উদ্যোক্তারা। এদিন তাঁরা ওই অনুষ্ঠান বয়কট করে বিকেলে প্রতিবাদ সভায় শামিল হবেন। বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রতিবাদের কথা জানাল ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’।
[আরও পড়ুন: তদন্তের নামে আদিবাসী মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ, রাজস্থানে সাসপেন্ড ৫৯ বছরের পুলিশ কর্তা]
কলকাতার বড় বড় দুর্গাপুজোর আয়োজনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ (Forum For Durgotsav) নামের সংগঠনটির। সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধন থেকে শিল্পীদের সুবিধা-অসুবিধা, সব দিক খেয়াল রেখে সুষ্ঠুভাবে পুজোর চারদিন দর্শক আগমনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেন সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু শুক্রবার ভিক্টোরিয়ার অনুষ্ঠানে তাঁরাও ব্রাত্য। আর সেই কারণেই প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর তরফে সভাপতি কাজল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন,
”প্রিয় সাথী,
বাংলার দুর্গাপুজোর UNESCOর স্বীকৃতি লাভে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের বিগত কয়েকবছরের উদ্যোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে আজ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলে এই সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠান হতে চলেছে। আমাদের রাজ্য সরকার ও কলকাতার দুর্গাপূজার উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টাকে হেয় করে দেখানোর এই অভিসন্ধির প্রতিবাদ জানাতে আজ, শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় প্রেস ক্লাবে ফোরাম ফর দুর্গোৎসবের উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়েছে। ফোরামের সদস্য প্রতিটি ক্লাবের মেম্বাররা এই সভায় উপস্থিত থাকবেন।”
[আরও পড়ুন: টিটাগড়ে শুটআউট, ইদের মেলা থেকে ফেরার পথে খুন যুবক]
প্রতিবাদের একেবারে যথার্থ পথ। ভিক্টোরিয়ার (Victoria) অনুষ্ঠানে বাংলার কেউই আমন্ত্রিত নন, তা জেনেই ফুঁসে উঠেছিলেন শিল্পীরা। সনাতন দিন্দার প্রতিক্রিয়া, ”মুখ্যমন্ত্রী সাহায্যের হাত না বাড়ালে ডানা মেলতে পারত না কলকাতার দুর্গাপুজো। কেন্দ্রীয় সরকার রাজনীতি করার অছিলায় আপামর বাঙালিকে অপমান করল।”