স্টাফ রিপোর্টার: ২৮ আগস্ট, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠাদিবসে মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির সমাবেশ। আর সেখানে বক্তা তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের এগিয়ে দেওয়ার নির্দেশ তৃণমূল নেত্রী-মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ছাত্রীরা ছাড়া যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন বলে নেত্রী ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করেছেন। সভায় প্রধান বক্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। ২১ জুলাইয়ের পর ফের অভিষেক দলের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখবেন এই সংবাদেই ছাত্র-যুবদের মধ্যে উদ্দীপনা শুরু হয়েছে, সোমবার সন্ধ্যায় এমনই দাবি করেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
কলকাতা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের যে ছাত্রীরা টিএমসিপির (TMCP) সভায় বক্তব্য রাখবেন, তাঁদের ভাষণের বিষয়বস্তুও সংগঠনের তরফে এদিন বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেত্রীর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি ও দলের গাইডলাইন মেনে তরুণ প্রজন্মকে বক্তব্য রাখতে যে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধুব্ধ করেছেন, তা এদিন মেয়ো রোডে প্রস্তুতি সভায় স্বীকার করেন ছাত্র-নেতারা। দুটি বাছাই গান গাইবে 'জয়ী' ব্যান্ড। সূত্রের খবর, দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে বারোটার মধ্যে মঞ্চে চলে আসার কথা মমতা-অভিষেক দুজনেরই। এই প্রথম সমাবেশের মঞ্চ গত ১৩ বছরে রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সাফল্য ও প্রকল্প-পরিষেবা নিয়ে থিমে মুড়ে দেওয়া হচ্ছে। মঞ্চে রাজ্যের দুই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। সভায় থাকবেন সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদরাও।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের হার, ‘নেপথ্যে ভারত’, দাবি রামিজ রাজার!]
ছাত্র সমাবেশ নিয়ে গত বৃহস্পতিবারই সংগঠনের প্রথম সভাপতি ও মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় এবং বর্তমান সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যকে নবান্নে (Nabanna) ডেকে পাঠিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে খবর নেওয়ার পাশাপাশি গাইডলাইন জানিয়ে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এর পরই নেত্রীর নির্দেশে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস দূরের জেলা থেকে আসা কর্মীদের নেতাজি ইন্ডোর, ক্ষুদিরাম ও সল্টলেকে স্টেডিয়ামে থাকা ও খাওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সোমবার বিকেলে ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসে পৌঁছে গিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ (North Bengal) থেকে এবার রেকর্ড সংখ্যক ছাত্রছাত্রী আসবে বলে আশা করছেন ছাত্র নেতৃত্ব। এদিনই মেয়ো রোডে বসে স্বেচ্ছাসেবক ও পুলিশের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যরা।
[আরও পড়ুন: ‘ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসুন…’, আর জি কর কাণ্ডে গর্জে উঠলেন জিতু কমল]
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রতিষ্ঠা এবং বামবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে সমাবেশে একটি ৩১০ পাতার বই প্রকাশ করা হবে। ‘সাথী’ নামের ওই বইটির নামকরণ ও প্রচ্ছদের ভাবনা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর। বইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা যেমন রয়েছে তেমনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) লেখা রয়েছে। থাকছে প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের একটি পুরনো লেখা। এছাড়াও ছাত্র আন্দোলন নিয়ে কুমুদ ভট্টাচার্য, অশোক দেব, বিভাস চৌধুরী, অরূপ বিশ্বাস, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ চক্রবর্তীদের অভিজ্ঞতা রয়েছে বইয়ে। সম্পাদনা করেছেন সন্দীপন মিত্র, ভূমিকা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যর।
ভারী বৃষ্টির (Rain) কথা মাথায় রেখে মেয়ো রোডে সমাবেশস্থলে পুরো শেড দিয়ে ঘিরছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। গান্ধী মূর্তি থেকে পার্ক স্ট্রিট মুখী রাস্তায় একটা বড় অংশই মঙ্গলবারের মধ্যে শেডে ঢাকা পড়বে। মঞ্চে এই প্রথম বিশেষ থিম থাকছে। নেত্রীর নির্দেশ মেনে সামনে শুধুমাত্র পাঁচ হাজার ছাত্রী বসবে। কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলার সমস্ত কলেজে থেকে বেশি সংখ্যায় ছাত্রীদের এই সমাবেশে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, প্রদেশ ছাত্র পরিষদের (Chhatra Parishad) নয়া সভানেত্রী প্রিয়াঙ্কা চৌধুরির নেতৃত্বে মহাজাতি সদনে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করবেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। দীর্ঘদিন পরে একজন নেত্রীর হাত ধরে প্রদেশ ছাত্র পরিষদ কর্মসূচি পালন করছে। সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং কানাইয়া কুমারের থাকার কথা।