সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মধুমালতী’র মতো নিজের কণ্ঠের জাদুতে কয়েক দশক ধরে সংগীত জগৎকে মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। তাঁর সুরের ঝরনায় আজও বাংলা তথা ভারতের সংগীত জগৎ স্নিগ্ধতায় ভরে রয়েছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee), এই নামের পাশে আজও বেমানান প্রয়াত শব্দ। তবু বাস্তব কঠিন হলেও মেনে তো নিতেই হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গীতশ্রীর জীবনাবসান হয়েছে। শুক্রবার তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করেন চার মহিলা পুরোহিত। মন্ত্রোচ্চারণ, গানের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয় কিংবদন্তিকে।
নন্দিনী, রুমা, সেমন্তী, পৌলমী- চার মহিলা পুরোহিতের নাম এখন আর বাঙালির কাছে অজানা নয়। এই চারজনকেই মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়ার দায়িত্ব দিয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে সৌমি। সাধারণত কারও প্রয়াণের পর হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার রীতি রয়েছে। তবে নন্দিনীরা নিজেদের এই আচারকে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের বদলে পারলৌকিক ক্রিয়া অনুষ্ঠান বলতেই পছন্দ করেন।
[আরও পড়ুন: বাপি লাহিড়ীকে নিয়ে কুরুচিকর পোস্ট! নেটিজেনদের রোষানলে অভিনেত্রী আদা শর্মা]
কেমন হয় বিশেষ এই অনুষ্ঠান? সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালের প্রশ্নের উত্তরে নন্দিনীদেবী বলেন, “আমাদের কাজের পদ্ধতি সম্পর্কে মোটামুটি সবাই ওয়াকিবহাল। অত্যন্ত টেক্সট বেসড একটা কাজ হয়। প্রাচীন সাহিত্য এবং মনীষীদের জীবন আদর্শ, তাঁদের বাণী উদ্ধৃত করা হয়। থাকে আমাদের কবিদের গান, বাংলা গান। এসবের মাধ্যমেই আমরা মৃতের পরিবারকে আমরা একটু শান্তি দেওয়ার চেষ্টা করি। যদি কেউ চান তাহলে হোম করি। সৌমি আমাদের বলেছিলেন তাঁর মা খুব হোম পছন্দ করতেন। সেই কারণেই হোমের আয়োজন করা হয়েছিল।”
পারলৌকিক এই ক্রিয়া প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে চলে। “আমাদের কতটুকুই বা ক্ষমতা। প্রাচীন সাহিত্যের উপর ভিত্তি করে তার থেকে প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে প্রয়াতের পরিবারকে একটু শান্তি দেওয়ার কাজ করি। সেটা একটু সংগঠিতভাবে করা হয়। যাতে মনটা ভাল লাগে। একটু শান্তি পাওয়া যায়। সবাই যাতে এতে অংশ নিতে পারেন, গান গাইতে পারেন সেভাবেই আয়োজন করা হয়। একটা সময় আমরা মন্ত্রোচ্চারণ করতে থাকি আর সকলে পুষ্প অর্পণ করতে থাকেন। সবাই অংশগ্রহণ করে বলেই বোধহয় এত ভাল লাগে।” সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছিল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি। যতক্ষণ চার পুরোহিতের অনুষ্ঠান চলে, ততক্ষণ বাদে বাকি সময়ে গীতশ্রীর গানই চালানো হয়। এভাবেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয় কিংবদন্তিকে।