সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিব সেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরের একটি ব্যঙ্গচিত্র সোশ্যাল মেসেজিং অ্যাপে শেয়ার নিয়ে শনিবার যখন মুম্বই সরগরম, ঠিক সেদিনই একটি মামলায় বম্বে হাই কোর্ট আরও একবার মনে করিয়ে দিল যে ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদে যে বাক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, সেগুলি শর্তহীন নয়। এদিন বিচারপতি এস এস শিণ্ডে এবং বিচারপতি এম এস কারনিকের বেঞ্চ বলেছে, বাক স্বাধীনতা (Freedom of speech) ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে অবাধ মনে করা ঠিক নয়।
ঘটনাচক্রে এই মামলাটিও মহারাষ্ট্রের ঠাকরে পরিবার ঘিরে। শিব সেনা সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর ছেলে তথা মন্ত্রী আদিত্যকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘কুরুচিকর’ মন্তব্য করার অভিযোগে সুনয়না হোলি নামে এক মহিলার বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দায়ের করে। তদন্তে সহযোগিতায় প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিম্ন আদালতে জামিন পেলেও, তিনি পরে তা আর পালন করেননি বলে পুলিশের অভিযোগ। গ্রেপ্তারি এড়াতে ওই মহিলা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু দুই বিচারপতির বেঞ্চ সেই আরজি খারিজ করে দিয়েছে। অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে বলেন, সংবিধানের (Constitution of India) ১৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর মক্কেলের প্রাপ্য অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তখনই বেঞ্চের তরফে বলা হয়, নাগরিকরা সম্ভবত এই ধারণা পোষণ করছেন বাক স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবাধ। কিন্তু সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদের অধিকারগুলির কোনওটাই নিরঙ্কুশ নয়।
[আরও পড়ুন: প্রতিহিংসার রাজনীতি! দিল্লি হিংসার ঘটনায় চার্জশিটে নাম যোগেন্দ্র যাদব–ইয়েচুরির]
ভারতীয় সংবিধানের ১৯ থেকে ২২ নম্বর অনুচ্ছেদে মৌলিক অধিকারের মধ্যে ৬ ধরনের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। ১৯৯৪ সালে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে অশালীন ও কুরুচিকর প্রবন্ধ ছাপার অভিযোগে বম্বে হাই কোর্টে (Bombay High Court) একটি মামলা হয় এক পত্রিকা সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট প্রবন্ধ লেখকের বিরুদ্ধে। সেই সময়ও বম্বে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, বাকস্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার নিরঙ্কুশ নয়। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান পত্রিকার সম্পাদক। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টও হাই কোর্টের রায় সমর্থন করে বলেছিল, ভাবনাচিন্তা প্রকাশেরও সীমা রয়েছে।
The post নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা অবাধ বা সীমাহীন হতে পারে না, পর্যবেক্ষণ বম্বে হাই কোর্টের appeared first on Sangbad Pratidin.