সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিরাট কোহলির (Virat Kohli) প্রবল সমালোচক গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। খেলার মাঠে বিরাট কোহলির প্রবল শত্রুও গম্ভীর।
বিরাট কোহলির নেতৃত্ব নিয়ে একাধিকবার সমালোচনা করেছিলেন গম্ভীর। আবার খেলার মাঠে কোহলি ও গম্ভীর মারমুখী ছবিরও জন্ম দিয়েছেন।
এহেন দিল্লির দুই ক্রিকেটারের সম্পর্ক একসময়ে ভালই ছিল। কিন্তু সময় যত গড়াল দু’ জনের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকল। বন্ধু হয়ে গেল শত্রু।
সোমবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস ম্যাচে ধুন্ধুমার ঘটে গেল বিরাট ও গম্ভীরকে নিয়ে।
[আরও পড়ুন: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগেই সুখবর, ICC টেস্ট ক্রমতালিকায় শীর্ষে ভারত]
খেলার শেষে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন বিরাট কোহলি। আরসিবি-র ভিডিও পোস্টেও কোহলিকে বক্তব্য পেশ করতে দেখা গিয়েছে। গম্ভীর অবশ্য কিছু বলেননি। কিন্তু অতীতে এই গম্ভীরকেই বলতে শোনা গিয়েছিল, ”কোহলির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনও সমস্যা নেই। আমরা দু’ জনেই আগ্রাসী খেলোয়াড়, প্যাশনেট, সেই কারণেই দু’ জনের দেখা হলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমি চিরকাল আগ্রাসী এবং আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে এসেছি।” কোহলিও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেন।
দিল্লির দুই ক্রিকেটারের সম্পর্ক কিন্তু অতীতে ভালই ছিল। কোহলির থেকে সিনিয়র গম্ভীর। ইডেন গার্ডেন্সে কোহলিকে নিজের ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন গম্ভীর।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোহলির অভিষেক হয় ২০০৮ সালে। ২০০৯ সালে প্রথম সেঞ্চুরি পান বিরাট। সেবার ভারত সফরে এসেছিল শ্রীলঙ্কা। ইডেনের সেই ওয়ানডে ম্যাচে শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে ৩১৫ রান করেছিল। রান তাড়া করতে নেমে ভারত ৪৮.১ ওভারেই রান তুলে নেয়। গম্ভীর ১৫০ রানে অপরাজিত থেকে যান। কোহলি করেন ১০৭ রান। শ্রীলঙ্কার রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বীরেন্দ্র শেহওয়াগ ও শচীন তেণ্ডুলকরের উইকেট হারায় ভারত। দ্রুত ২ উইকেট গেলেও গম্ভীর ও কোহলির চওড়া ব্যাটে ভর করে খুব সহজেই ম্যাচ জিতে নেয় ভারত। তৃতীয় উইকেটে কোহলি ও গম্ভীর ২২৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন গম্ভীর। কিন্তু অগ্রজ গম্ভীর সেই পুরস্কার দিয়ে দেন কোহলিকে। মোবাইল, এক লক্ষ টাকার চেক এবং ট্রফি পান বিরাট। কোহলির প্রথম সেঞ্চুরি স্মরণীয় করে রাখার জন্যই গম্ভীর ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন কোহলির হাতে।
২০১১ সালের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ছিলেন দুই তারকা। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে কোহলি সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। ফাইনালে গম্ভীর দুরন্ত ব্যাটিং করেন। অল্পের জন্য সেঞ্চুরি পাননি গম্ভীর। কিন্তু আইপিএলে দু’ জনের সম্পর্ক বদলে যায়। ২০১৩ সালের আইপিএলের সময়ে গৌতম গম্ভীর কলকাতা নাইটরাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন। আরসিবির ক্যাপ্টেন ছিলেন কোহলি। আরসিবি বনাম কেকেআর ম্যাচে লেগে গিয়েছিল গম্ভীর ও কোহলির মধ্যে। বাজে বিজ্ঞাপন হিসেবে রয়ে গিয়েছিল তা। ২০১৬ সালে ফের দু’ জনের মধ্যে ঝামেলা বাঁধে।
২০১৩ থেকে ২০২৩- দশ বছর অতিক্রান্ত। গম্ভীর ও কোহলির সম্পর্কের উন্নতি আর ঘটেনি খেলার মাঠে। সোমবার আরও একবার কোহলি ও গম্ভীর একে অপরের দিকে তেড়ে গেলেন, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়লেন। উত্তাল হল সোশ্যাল মিডিয়া। দু’ জনের সম্পর্ক নিয়ে চর্চা হল গোটা দেশ জুড়ে।