শুভঙ্কর বসু: নির্ভয়ে কাজ করুন। কমিশনের নির্দেশ কার্যকর করতে যথাসম্ভব পদক্ষেপ নিন। আমরা জানি কীভাবে ভোট করাতে হয়। বুধবার শহরে পা রেখেই রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) আজিজ আফতাবকে এই বার্তা দিল কমিশনের (Election Commission) ফুল বেঞ্চ।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, বুধবার সন্ধেয় মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরার নেতৃত্বে রাজ্যে পৌঁছয় কমিশনের ফুল বেঞ্চ। তারপরই সিইওর সঙ্গে বৈঠকে বসেন তারা। রাজ্যের পুলিশ নোডাল অফিসার তথা এডিজি আইন শৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংয়ের সঙ্গে এদিনই ফুল বেঞ্চের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে সেই সূচি পরিবর্তন হয়। তাঁকে বৃহস্পতিবার প্রথমার্ধে তলব করেছে কমিশন। জ্ঞানবন্ত সিং জানিয়েছেন, সকাল ৯.৩০ নাগাদ তিনি ফুল বেঞ্চের সঙ্গে দেখা করবেন।
এদিকে আরিজ আফতাবের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে নিজেদের কড়া মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছে ফুল বেঞ্চ। সিইওর দপ্তরের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁকে অভয় দিয়ে কমিশনের বার্তা, এ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। কমিশনের চোখ, কান ও মুখ বলতে যা বোঝায় তা হল মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর। নির্দেশ পালনে যেন কোনও খামতি না থাকে। নির্বাচনের কাজে যুক্ত আধিকারিকদের যথাসম্ভব নিরপেক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। এবার পশ্চিমবঙ্গে ১০০ শতাংশ হিংসামুক্ত নির্বাচন করতে কমিশন বদ্ধপরিকর। সেজন্য যা যা পদক্ষেপ প্রয়োজন তা কমিশন করবে। কোনওরকম ভুল বরদাস্ত করা হবে না। জেলা প্রশাসনগুলিকে কমিশনের এই বার্তা স্পষ্ট করে দিতে বলেছে বেঞ্চ।
[আরও পড়ুন: দলত্যাগী বিধায়কদের শোকজ তৃণমূলের, নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে পার্থকে পালটা চিঠি মিহিরের]
এবারের ভোটে (Assembly Election 2021) পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার হাল ফেরাতে উঠে পড়ে লেগেছে কমিশন। বিগত নির্বাচনগুলির অভিজ্ঞতার নিরিখে এবার হিংসা ঠেকাতে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে তারা প্রস্তুত। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের এক কর্তার কথায়, “বিগত ভোটগুলিতে যে হিংসার ছবি রাজ্যে ধরা পড়েছে তার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে এবার প্রথম থেকেই হাল ধরতে চাইছে কমিশন। উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন রাজ্যে এসেই সেই মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন।” গত কয়েকদিন আগেই রাজ্যে এসে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনিক আধিকারিকদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন উপ নির্বাচন কমিশনার। অবিলম্বে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে বলার পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলার হাল ফেরাতে যথাসম্ভব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুদীপ জৈন। দিল্লি ফিরে কমিশনের দপ্তরে একটি বিস্তারিত রিপোর্টও জমা দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার প্রথমার্ধে এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, জেলা প্রশাসন এবং নির্বাচনের কাজে যুক্ত আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং রাজ্য প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে ফুল বেঞ্চের বৈঠক হওয়ার কথা। শুক্রবার দিল্লি রওনা দেবেন তাঁরা। বুধবার শহরে পা রাখার পর সুনীল আরোরা বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় সফর। সাংবাদিক বৈঠকে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেব।”