নবেন্দু হাজরা: রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার রাস্তায় হেঁটেও দাবি পূরণ হল না ডিএ (DA) আন্দোলনকারীদের। সরকারের তরফে মুখ্যসচিব সাফ জানিয়ে দিলেন, সরকারের কোষাগারে আপাতত টান রয়েছে। যখন সংস্থান হবে, তখন আন্দোলনকারীদের দাবিমতো ডিএ দেওয়া সম্ভব হবে। তার আগে নয়। আর সরকারের এই ভূূমিকায় ক্ষুব্ধ ডিএ আন্দোলনকারীরা। যৌথ মঞ্চের তরফে পরবর্তীতে আন্দোলনের ধার আরও বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে নবান্ন (Nabanna) ছাড়লেন। ধর্মতলার শহিদ মিনারের অবস্থান বিক্ষোভ আরও তীব্র হবে, কলকাতায় (Kolkata) মহামিছিল হবে আগামী ৬ মে, হবে ধর্মঘটও। বৈঠকে ‘ব্যর্থ’ দাবি করে প্রাথমিকভাবে এই কর্মসূচি ঘোষণা করলেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চে আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ।
হাই কোর্টের পরামর্শ মেনে শুক্রবার নবান্নে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের ৫ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা। ছিলেন মুখ্যসচিব, অর্থসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিব। রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের ২ প্রতিনিধিও বৈঠকে ছিলেন। আন্দোলনকারীরা নিজেদের দাবিদাওয়া পেশ করেন। কিন্তু সরকার নিজের অবস্থানে অনড় থেকে অপারগতার কথাই জানায়। মুখ্যসচিব জানান, সরকার তাঁদের প্রতি সহানুভূতিশীল। কেন্দ্রের কাছে অনেক অর্থ আটকে, ফলে এই মুহূর্তে ভাঁড়ারে সংকট রয়েছে। তাই দাবিমতো ৩৬ শতাংশ ডিএ দেওয়া সম্ভব নয়।
[আরও পড়ুন: শিক্ষার পর এবার পুরসভা দুর্নীতিতেও সিবিআই তদন্ত, নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
এই বৈঠককে সম্পূর্ণ ব্যর্থ বলে মনে করছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। নবান্ন থেকে বেরিয়ে সংগ্রামী মঞ্চের তরফে ভাস্কর ঘোষ-সহ ৩ প্রতিনিধি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানান, সরকার বারবার কোষাগারে সংকটের কথা বলছে। অথচ সরকারি আধিকারিকরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পান, তাহলে তাঁরা কেন বঞ্চিত থাকবেন? যৌথ মঞ্চ মনে করছে, কেন্দ্রের বকেয়া না পাওয়ায় ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না বলে সরকার বারবার যে যুক্তি খাঁড়া করছে, তা অর্থহীন। ওই টাকার সঙ্গে এঁদের বকেয়া মেটানোর কোনও সম্পর্ক নেই। যদিও অর্থসচিব এদিন আন্দোলনকারীদের প্রশ্নের মুখে স্বীকার করেছেন যে অর্থ কমিশনের তরফে সমস্ত টাকা এসেছে হাতে। তাহলেও কেন বকেয়া ডিএ দেওয়া যাবে না, সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বাড়িতে CBI, হাই কোর্টের নির্দেশের ৩ দিনের মাথায় হানা]
এই ‘নিষ্ফলা’ বৈঠকের আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বাড়াবে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি আগামী ৬ তারিখ কলকাতায় মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শহিদ মিনারের অবস্থান বিক্ষোভ তীব্রতর হবে। আরও একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে নিজেদের দাবিপূরণের জন্য সোচ্চার হওয়ার অঙ্গীকার নিয়েছে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ।