অর্ণব আইচ: গার্ডেনরিচের আমির খানের গেমিং অ্যাপের টাকা বিদেশে পাচার। আমির-সঙ্গী রুমেন আগরওয়ালের মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা ডলারে পাচার হয়েছে এক প্রবাসী ভারতীয় এজেন্টের কাছে। এ ছাড়াও আরও কয়েক কোটি টাকাও বেশ কয়েকজন বিদেশি এজেন্টদের হাতে পৌঁছে গিয়েছে বলে অভিযোগ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ছাড়াও যেভাবে ব্যাংক লেনদেনে নগদ টাকা পাঠানো হয়েছে, তাতে হতবাক গোয়েন্দারাও। এই ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে উল্টোডাঙা থেকে ধৃত রোমেন আগরওয়াল ওরফে রুমেনকে টানা জেরা করছেন ইডি আধিকারিকরা। ওই এনআরআই এজেন্ট ও তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে আরও তথ্য পেতে ইডি সাহায্য নিতে পারে ইন্টারপোলের। এদিকে, গেমিং অ্যাপে আমির খানের লেনদেনের পরিমাণ সাত হাজার কোটি টাকা ছাড়াতে পারে বলে ধারণা কলকাতা পুলিশ ও ইডির।
[আরও পড়ুন: নতুন করে তৈরি হবে সেবকের করোনেশন ব্রিজ, পুনর্নির্মাণ হবে আরও এক সেতুর, সিদ্ধান্ত নবান্নের]
গেমিং অ্যাপ চক্রের মূল পান্ডা আমির খানের গার্ডেনরিচের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার করে ইডি। সেই সূত্র ধরেই ইডি সন্ধান পায় আমিরের সঙ্গী রুমেন আগরওয়ালের। উল্টোডাঙায় ব্যবসায়ী রুমেনের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। তার ক্রিপ্টোকারেন্সির অ্যাকাউন্ট থেকে সাত কোটি টাকা ইডি ফ্রিজ করে। একই সঙ্গে রুমেনের একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখেন ইডির গোয়েন্দারা। তাতেই প্রমাণ মেলে যে, রুমেন আগরওয়ালের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একটি অ্যাকাউন্টে সাড়ে চার লক্ষ মার্কিনি ডলার লেনদেন হয়েছে। যে ব্যাংকটিতে ওই টাকা পাঠানো হয়েছে, সেটি বিদেশের। যে ব্যক্তিকে টাকা পাঠানো হয়েছে, তিনি প্রবাসী ভারতীয়। ওই ডলারের পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ২৯ হাজার টাকা। এর ফলেই ইডি প্রমাণ পেয়েছে, কী পদ্ধতিতে আমির খান ক্রিপ্টোকারেন্সি ছাড়াও গেমিং অ্যাপ থেকে জালিয়াতি করা বিপুল টাকা বিদেশে পাঠাত।
ইডি আধিকারিকদের মতে, রুমেনের মতো কলকাতা বা তার আশপাশের বাসিন্দা এজেন্টদের সাহায্য নিয়েই বিদেশি এজেন্ট তৈরি করত আমির। এই ক্ষেত্রে রুমেন তারই এক পরিচিতকে বিপুল টাকা ডলার হিসাবে পাঠায়। এরকম অন্যান্য এজেন্টরাও তাদের পরিচিত প্রবাসী ভারতীয়দের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায়, যার পরিবর্তন হয় ডলার বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রায়। তার বদলে ওই প্রবাসী ভারতীয়দের মোটা টাকা কমিশনের টোপ দেওয়া হত। এতে রাজিও হতেন অনেক এনআরআই।
[আরও পড়ুন: ২০১৪ ও ২০১৭’র টেট উত্তীর্ণদের এখনই শংসাপত্র নয় তবে জানানো হবে নম্বর, জানাল পর্ষদ]
গোয়েন্দাদের কাছে খবর, আমিরদের প্ররোচনায় ওই প্রবাসী ভারতীয়রা গেমিং অ্যাপ চক্রের বিদেশি এজেন্ট হিসাবে সেই বিশেষ দেশগুলির বাসিন্দাদেরও কমিশনের টোপ দেন। তার ফলে কিছু বিদেশিও কমিশনের বিনিময়ে গেমিং অ্যাপের টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্ট রেখেছেন। চলতি সপ্তাহে আমির খানকে জেল হেফাজত থেকে ফের আদালতে তুলবে কলকাতা পুলিশ। এবার ইডিও আমিরকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।