shono
Advertisement

গঙ্গার গ্রাসে একের পর এক বাড়ি, আতঙ্কে দিন গুজরান সামশেরগঞ্জের বাসিন্দাদের

রাজ্য সেচদপ্তরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
Posted: 08:57 PM Aug 31, 2023Updated: 08:58 PM Aug 31, 2023

শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: গঙ্গাভাঙন সামশেরগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভাঙনে বসত ভিটে থেকে শুরু করে কৃষি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। সামশেরগঞ্জের মানচিত্র থেকে একের পর এক গ্রাম নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা সর্বস্বান্ত হয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নামছেন। ভাঙনের আতঙ্কে নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা বাড়িঘর ভেঙে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে কোনওরকমে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। ভাঙন রোধে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কাজের কাজ না হওয়ায় বিপদের মুখে বাসিন্দারা।

Advertisement

ভাঙন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে আজ বারো মাসে তেরো পার্বণের মতো একটা অভিশপ্ত উৎসবে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সামশেরগঞ্জ থানার বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেশটোলা গ্রামে ভয়াবহ গঙ্গা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে দুপুর এগারোটা পর্যন্ত প্রায় ৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে গ্রামবাসীদের আশঙ্কা। প্রায় দু-আড়াই বছর ধরে সামশেরগঞ্জ ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল গঙ্গা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের সম্মুখীন হয়েছে। মহেশটোলা, শিবপুর, প্রতাপগঞ্জ-সহ একাধিক গ্রাম গঙ্গা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছে। গ্রামগুলিতে গৃহহীন হয়েছেন প্রায় দু’ হাজারের বেশি বাসিন্দা। নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে প্রায় কয়েক হাজার বিঘা জমি।

[আরও পড়ুন: ‘ও তো আর ফিরবে না’, ফাঁসির রায় শুনে অঝোরে কান্না বহরমপুরে নিহত সুতপার মায়ের]

ভাঙন প্রতিরোধের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য বরাদ্দ হয়নি। মাসদুয়েক আগে মালদহ প্রশাসনিক বৈঠক সেরে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের ভয়াবহ গঙ্গা ভাঙন সরেজমিনে পরিদর্শনে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সামশেরগঞ্জের নদী ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেন। যদিও ভাঙন রোধের কাজ সঠিকভাবে হয়নি বলে দাবি ভাঙন কবলিত বাসিন্দাদের। রঘুনাথগঞ্জ রাজ্য সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে গঙ্গায় জলস্তর খুব বেশি থাকায় ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করা সম্ভব না। মহেশটোলার বাসিন্দা স্মরজিৎ সাহা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হঠাৎ করে ভাঙন শুরু হয়েছে। ঘন্টাদেড়েকের মধ্যে নদীগর্ভে প্রায় ২০-২৫টি বাড়ি তলিয়ে গিয়েছে। নতুন করে শুরু হওয়া এই ভাঙনে মহেশটোলা গ্রামের বাসিন্দারা দিশাহীন হয়ে পড়েছেন। কিছু বাসিন্দা স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা গোবিন্দ সরকার বলেন, “আমরা জানি রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কিছুদিন আগে আমরা দেখলাম নদীতে যখন জল বাড়ছিল সেই সময় কিছু বালির বস্তা ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের কাজ করার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু বোল্ডার দিয়ে কাজ না করলে সামশেরগঞ্জে গঙ্গা নদীর ভাঙন প্রতিরোধ করা অসম্ভব।” এপ্রসঙ্গে বোগদাদনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নাজমিরা বিবি জানান, “সকাল থেকে শুরু হওয়া ভাঙনে প্রায় ৩০টি বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। কয়েকবিঘার জমিও নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। নদী ভাঙনে মহেশটোলা-ধুলিয়ান রাজ্য সড়ক এর আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। নতুন করে ভাঙনে রাস্তাটির আরও ক্ষতি হওয়ায় সেই পথ দিয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে আমরা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। ভাঙনের বিষয়টি রাজ্য সেচদপ্তরকে জানানো হয়েছে।”
দেখুন ভিডিও:

[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ইউরোপ সফরে আমন্ত্রিত কুণাল ঘোষ, পাসপোর্ট ফেরত চেয়ে হাই কোর্টে তৃণমূল নেতা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement