মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: বেসরকারি হাতে যাচ্ছে হাওড়া-সহ রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনকেন্দ্র শ্যামপুরের গড়চুমুক ‘মিনি জু’ (Mini Zoo)। হাওড়া জেলা পরিষদ পরিচালিত এই পর্যটনকেন্দ্রের হস্তান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঠিকাদারকে শীঘ্রই তা দিয়ে দেওয়া হবে। বেসরকারি হাতে যায় এবার এখানে আসা পর্যটকদের খরচ প্রায় চার গুণ বেড়ে যাবে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর খুলতে চলেছে গড়চুমুক ‘মিনি জু’। যাবতীয় পরিকাঠামোর কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। ভারচুয়ালি ‘জু’ উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বর্তমানে গড়চুমুক ‘মিনি জু’-কে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। একটি অংশ বন দপ্তরকে দেওয়া হয়েছে। অন্য অংশ অর্থাৎ উদ্যানের অংশটি দেওয়া হয়েছে বেসরকারি সংস্থাকে। যা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। বেসরকারি সংস্থাই কাজটি করছে। হাওড়া জেলা পরিষদের বন ও ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ অন্তরা সাহা বলেন বেসরকারি গড়চুমুকের উদ্যান অংশ একটি সংস্থার হাতে দেওয়া হচ্ছে পর্যটকদের আরও উন্নত ও ভাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য।
হাওড়া জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, প্রায় ১৫ বছরের জন্য লিজ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি সংস্থাকে। বার্ষিক ১৮ লক্ষ টাকায় এই লিজ দেওয়া হয়েছে। ফলে এবারে পর্যটকরা গড়চুমুকে এলে তাদের খরচ অনেকটা বাড়বে। কারণ, গড়চুমুক ‘মিনি জু’ এবং উদ্যান, এই দু’টি জায়গাতেই ঘোরার জন্য দু’বার টিকিট কাটতে হবে। উদ্যান এলাকায় ঘোরার জন্য এ মুহূর্তে দশ টাকা থাকলেও তা বেড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা হতে পারে এবং আলাদা আরও ২৫ টাকা ব্যয় করে টিকিট কাটতে হবে ‘মিনি জু’ ঘোরার জন্য। মোট ৪০ টাকা একজনের জন্য খরচ হবে গড়চুমুক ‘মিনি জু’ ঘুরতে।
[আরও পড়ুন: কলকাতার কাছেই নতুন তারামণ্ডল, দেশে প্রথম 3D লেজার শোয়ে মিলবে মহাকাশ দর্শনের সুযোগ]
বনদপ্তর সূত্রে খবর, জু-কে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। প্রচুর বেশি পশুপাখি আনা হচ্ছে। চিড়িয়াখানাটিকে যাতে ‘মিডিয়াম জু’ রূপান্তরিত করা যায় সেই প্রচেষ্টাও চালাচ্ছে বনদপ্তর।
দামোদর নদের তীরে গড়ে ওঠা এই গড়চুমুক ‘মিনি জু’-র বেশ কদর রয়েছে হাওড়া জেলা এমনকী রাজ্যের মধ্যেও। দীর্ঘ সাত মাস ধরে বন্ধ ছিল গড়চুমুক। পরিকাঠামোগত উন্নতির জন্য করোনা পিরিয়ডের পর থেকে বেশ কয়েকবার গড়চুমুক খুলেছে এবং তারপর নানা কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শেষবার বন্ধ হয় গত মে মাসে। দীর্ঘ কয়েক দশক গড়চুমুক খুব বেশি মনোরঞ্জক ছিল না। হরিণ-সহ কয়েক ধরনের পশুপাখি ছিল সেখানে।
বর্তমানে গড়চুমুক ‘মিনি জু’কে চিত্তাকর্ষক করতে সেখানে আনা হয়েছে এমু, ম্যাকাও, অজগর ,নীলগাই। এছাড়া দেশি-বিদেশি অনেক ধরনের প্রজাতির পাখি। পাখির ডাকে মুখরিত হবে গড়চুমুক। পাশাপাশি বন্যপ্রাণীর ডাকও শোনা যাবে। সবমিলিয়ে এখন গড়চুমুক বেশ জমে উঠছে। অবশ্য সেজন্য পর্যটকদের বেশি টাকাও খরচ করতে হবে। যা আগে ছিল না। তবে উদ্যানটিকেও ঢেলে সাজাবে ওই সংস্থা। তৈরি করা হবে ফুলের বাগান, পর্যটকদের খাওয়া-দাওয়ার জন্য তৈরি হবে ক্যাফেটেরিয়া, মনোরঞ্জনের জন্য ব্যবস্থা থাকবে বোটিংয়ের।
নিশি যাপনের জন্য গড়চুমুকে বেশ কয়েকটি কটেজ রয়েছে, সেগুলোর সংস্কার করবে ওই সংস্থা। পাশাপাশি সেগুলোকে বাতানুকূল করবে। অনলাইন এবং অফলাইনে (স্পটে) বুক করা যাবে। এজন্য ওই সংস্থা একটি ওয়েবসাইট চালু করবে। দামোদরের তীরে চড়ুইভাতির জায়গাও সংস্কার করা হবে। সেখানকার ভাড়াও বাড়বে। মোট কথা এবার ‘ফেলো কড়ি মাখো তেল’ অবস্থা হবে গড়চুমুকের।