নব্যেন্দু হাজরা: আদার ঝাঁজে চোখে জল আম গেরস্তের। বাজারভেদে আদা বিকোচ্ছে আড়াইশো থেকে তিনশো টাকায়। আগামী কয়েকদিনে সেই দাম আরও বাড়তে পারে। ফলে মাংস খাওয়ার আগে ভিনরাজ্যে এই আনাজের দাম জেনে নেওয়াটাই ভাল।
কিন্তু হঠাৎ হলো কী! ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মণিপুরে অশান্তির আঁচ এসে পড়েছে খোলা বাজারে। রীতিমতো আগুন আদার দামে। কুড়ি টাকার আদা চাইলেও ১০০ গ্রাম হচ্ছে না। চড়া দামের জন্য বাধ্য হয়ে অল্প পরিমাণেই আদা কিনছেন অধিকাংশ ক্রেতা।
[আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কাছে ফেরা হল না, ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত যুবক]
আদা-পিঁয়াজ ছাড়া বাঙালির বেশিরভাগ রান্নাই স্বাদহীন। কিন্তু হলে হবে কী! আদা কিনতে গিয়েই নাকের জলে, চোখের জলে আম-আদমি। ব্যবসায়ীদের কথায়, এ রাজ্যে আসা আদার একটা বড় অংশ আসে উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে। কিন্তু গত বেশ কিছুদিন ধরে মণিপুরে চলতে থাকা অশান্তির জেরে উত্তর পূর্ব ভারত থেকে পণ্য পরিবহণ ব্যাহত হয়েছে। ফলে কমেছে আদার জোগান। আবার দক্ষিণ ভারতের চেন্নাই থেকে যে আদা আসে, তার ফলনও এ বছর বৃষ্টির অভাবে কম হয়েছে। এই জোড়া কারণেই আদার দাম পাইকারি বাজারে প্রায় দুশো টাকা ছুঁয়েছে। খুচরো বাজারে সেই আদা কেজি প্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মূলত আসাম, মিজোরাম, মনিপুর এবং মেঘালয় থেকে চাহিদার ৬০ শতাংশ আদা এ রাজ্যে আসে। আর বাকি ৪০ শতাংশ আসে দক্ষিণ ভারত থেকে, মানে পাঞ্জাব। আর কিছু হয় এরাজ্যে। অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সেই আদা হয় উত্তরবঙ্গে। কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে এবছর দক্ষিণ ভারতের আদাও আসছে অনেক কম। সেই আদা বড় হয়নি। এক ব্যবসায়ীর কথায়, এক পাঞ্জা আদায় আগে ৫০০ গ্রাম থাকত। এখন তা কমে ৩৫০ গ্রাম হয়েছে। মানে এক কেজি আদায় কমে গিয়েছে ৩০০ গ্রাম। স্বাভাবিক নিয়মেই তাই দাম তো বাড়বেই।
[আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর কাছে ফেরা হল না, ভিড়ের চাপে ট্রেন থেকে পড়ে মৃত যুবক]
রোজ আগে শিয়ালদহ কোলে মার্কেটেই পাঁচ-ছ’গাড়ি আদা আসত। গত দিন পনেরোয় তা এসেছে মোটে চার গাড়ি। মণিপুরের অশান্তির আগে থেকেই সেখান থেকে ট্রাক আসছে না। তারই প্রভাব পড়েছে বাজারে। পাইকারী বাজারেই আদা বিকোচ্ছে ২২০-২৩০টাকা প্রতি কেজি হিসাবে। বাজারভেদে তার দামই উঠছে আড়াইশো থেকে তিনশো টাকায়। ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেন্ডার অ্যাশোসিয়েশনের সভাপতি কমল দে বলেন, ‘‘মণিপুরের অশান্তির আঁচ পড়েছে আদার দামের উপর। ওখান থেকে ট্রাক আসছে না। তাছাড়া বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে দক্ষিণ ভারতের থেকেও আদা এসেছে কম। ফলে দাম আরও বাড়লেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।’’