সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাথা ভর্তি সাদা চুল, কপালে হলুদ টিপ নিয়ে মঞ্চে উঠে বসতেন। খেয়াল, টপ্পা, ঠুংরি থেকে বসন্ত মুখারী – কোনওটা বাদ যেত না। সংগীতের মূর্ছনায় বিভোর হয়ে শুনতেন দর্শক। সে ‘তরকিব’-ই যেন আলাদা ছিল। শাস্ত্রীয় সংগীতের এক অধ্যায় শেষ হল মঙ্গলবার। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন গিরিজা দেবী। পিস হাভেনে শায়িত তাঁর মরদেহ। আনা হবে সংগীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতেও। শেষকৃত্য বেনারসে।
জন্ম বেনারসে। কিন্তু শহর কলকাতার প্রতি তাঁর অন্য টান ছিল। তাই এই শহরকেই শেষ বয়সে আপন করে নিয়েছিলেন। অনেকদিন ধরেই বাধর্ক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। এদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই রাত ৮.৪৫ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
অদ্ভুত একটা বেনারসি তালিম ছিল গিরিজা দেবীর। কণ্ঠশিল্পী এবং সারেঙ্গিবাদক সারজুপ্রসাদ মিশ্রর কাছে তিনি প্রথমে খেয়াল এবং পরে টপ্পায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে চাঁদ মিশ্রর কাছেও শিক্ষা গ্রহণ করেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য গিরিজা দেবী পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ ‘পদ্মশ্রী’, ‘পদ্মভূষণ’, ‘পদ্মবিভূষণ’-এর মতো অজস্র সম্মান। তিনি ঠুংরি, কাজরি ও দাদরাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। শুধু সংগীতশিল্পী হিসেবেই নয় মানুষ হিসাবে, শিক্ষিকা হিসাবে মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
[জানেন, বড়পর্দায় কার ভূমিকায় অভিনয় করতে মুখিয়ে বিদ্যা?]
প্রবীণ শিল্পীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, ‘সেনিয়া ও বেনারস ঘরানার ধ্রুপদী হিন্দুস্তানি সংগীত শিল্পী গিরিজা দেবীকে ২০১২ সালে রাজ্য সরকার ‘সংগীত মহাসম্মান’ ও ২০১৫ সালে ‘বঙ্গবিভূষণ’ সম্মাননা প্রদান করেছিল।’
পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর কথায়, ‘তাঁর মৃত্যুতে ঠুংরির সংসারে অন্ধকার ঘনীভূত হল।’ মায়ের মতো মানুষটার মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ওস্তাদ রশিদ খান, জাকির হুসেনও। শিল্পীর শোকপ্রকাশ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, সংগীত সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও।
[শাহরুখের সাক্ষাৎ না পেয়েই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ‘ফ্যান’ অরুণা]
The post থেকে গেল সুর, সুরলোকে গিরিজা দেবী appeared first on Sangbad Pratidin.