সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নতুন করে ফের আগুন জ্বলে উঠেছে মণিপুরে। উত্তর-পূর্বের ছোট্ট রাজ্যের জাতি দাঙ্গা সামাল দিতে 'অল আউট অ্যাকশন' মোডে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যেই মণিপুরে আরও ৯০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার ৮০০ জওয়ান পাঠানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই রাজ্যে মোট ২৮৮ কোম্পানি সেনা জওয়ান মোতায়েন করা হচ্ছে।
গত ৭ নভেম্বর থেকে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মণিপুর। বিশেষ করে এখানকার জিরিবাম জেলা। এখনও পর্যন্ত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে এখানে। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ১৪ নভেম্বর নতুন করে লাগু হয়েছে আফস্পা। বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। পরিস্থিতি সামলাতে গত ১৮ নভেম্বর ৫০ কোম্পানি আধাসেনা অর্থাৎ প্রায় ৫ হাজার সিআরপিএফ মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এবার আরও ৯০ কোম্পানি সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শুক্রবার এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং।
তিনি জানান, নতুন করে আরও ৯০ কোম্পানি ফোর্স মোতায়েন করা হচ্ছে। এই জওয়ানরা এলাকার বাসিন্দাদের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করবেন। তাঁদের নিরাপত্তা দেবেন। প্রত্যেক জেলায় আলাদা করে কন্ট্রোল রুম এবং কোঅর্ডিনেশন সেল খোলা হচ্ছে। আধা সেনার তালিকায় সিআরপিএফ জওয়ানদের পাশাপাশি থাকবে বিএসএফ, সেনা, অসম রাইফেলস, আইটিবিপি ও সশস্ত্র সীমাবল। এখনও পর্যন্ত ৩০০০ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে যা লুট করা হয়েছিল। নতুন করে যাতে কোনও হিংসার ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ। মায়ানমার সীমান্তর পাশাপাশি জায়গায় জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালাবে নিরাপত্তাবাহিনী। কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আধাসেনাকে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সাল থেকে মণিপুরে চলতে থাকা হিংসায় এখনও পর্যন্ত ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই উত্তেজনা কিছুটা থিতু হলেও গত সপ্তাহে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয় মণিপুরে। জিরিবাম জেলায় হামলা চালায় কুকি জঙ্গিরা। সেই ঘটনায় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে ১০ জঙ্গির মৃত্যু হলেও ৬ গ্রামবাসীকে অপহরণ করে কুকিরা। গত শনিবার তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনার পর থেকে নতুন করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে মণিপুর। প্রতিবাদে গত দুদিন ধরে বিক্ষোভ চলছিল। রবিবার রাতে এখানকার বাবুপাড়ায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল মেতেইরা। অভিযোগ, জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ গুলি চালালে সেখানে মৃত্যু হয় বছর কুড়ির এক যুবকের। এরই প্রতিবাদে উন্মত্ত জনতা হামলা চালায় বাবুপাড়ায় বিজেপি ও কংগ্রেসের পার্টি অফিসে। ভাঙচুরের পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দলীয় অফিসে।