সুমন করাতি, হুগলি: বাড়িতে বড়রা কেউ ছিল না। দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর দুই বোন মিলে খেলা করছিল। বছর নয়েকের শিশু গামছা নিয়ে খেলা করছিল। আচমকাই অঘটন। গলায় ফাঁস লেগে যায়। দিদিকে ছটফট করতে দেখে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে তার বোন। প্রতিবেশীদের জানায়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। প্রতিবেশীরা দৌড়ে আসতে আসতে সব শেষ। প্রাণ যায় শিশুর। সিনেমার দৃশ্য অনুকরণ করতে গিয়ে অঘটন বলেই মনে করছে মৃতার দিদা।
মৃত তিয়াসা ঠিকাদার। হুগলির বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ক্ষুদিরাম পল্লির বাসিন্দা। চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া সে। বাবা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। পরিচারিকার কাজ করে দুই মেয়েকে দেখভাল করেন তাদের মা। দিদাও নজর রাখতেন শিশুদের দিকে। রবিবার সকালে দুই মেয়েকে বাড়িতে রেখে কাজ করতে বেরন বধূ। বাড়িতে একাই ছিল দুই বোন। দিদা তাদের সকালে আম, মুড়ি খেতে দিয়ে বাড়ি থেকে বেরন। দুপুরে বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল তাঁর। ওই সময় দুই বোনই ছিল বাড়িতে। তারই মাঝে অঘটন। শিশুর দিদা বলেন, "দুই বোন বাড়িতে ছিল। বারবার বলত দিদি গামছা নিয়ে খেলা করে। ওদের মাকে বারণ করেছি। বলেছি গামছা নিয়ে খেলতে দিবি না। টিভি, মোবাইল দেখে। সেখানে দেখেই আত্মহত্যার দৃশ্য সম্ভবত অনুকরণ করতে যায়। তাতেই মৃত্যু।"
[আরও পড়ুন: বাবাকে খুন করে বাগানে পুঁতল ছেলে! অনুশোচনায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা]
প্রতিবেশীরা জানান, বাড়িতে বেশিরভাগ সময় একাই থাকত দুই বোন। দুজনেই অত্যন্ত ভালো স্বভাবের। কাউকে অকারণে বিরক্ত করত না। রবিবার দুপুরে ছোট মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। বলে তার দিদি গলায় ফাঁস লাগা অবস্থায় ছটফট করছে। সেকথা শুনে প্রায় সকলেই তড়িঘড়ি করে দৌড়ে যান। তাঁরা গিয়ে দেখেন, তিয়াসা দেহ ঝুলছে। উদ্ধার করে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিশুকে। যদিও চিকিৎসক জানান মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। এই ঘটনায় নেমেছে শোকের ছায়া। চোখের জলে ভাসছে পরিবারের লোকজন। শিশুর আকস্মিক মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন প্রতিবেশীরাও।