তারক চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: জিটিএ (GTA) চুক্তি থেকে বেরতে চেয়ে সই তুলে নিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। শুক্রবার সই প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে দলের তরফ থেকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) কাছে এই চিঠি পৌঁছেছে বলে খবর। শুক্রবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি (Roshan Giri)। তাঁর দাবি, জিটিএ তৈরি করা হয়েছিল পাহাড়ে গোর্খা জনজাতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এত বছরেও তা কোনওভাবেই গোর্খাদের উন্নয়নের পক্ষে কোনও কাজ করেনি। সেই কারণেই জিটিএ থেকে বেরতে চায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সেই মর্মে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই চিঠির ফলে ভেঙে যেতে পারে জিটিএ, এই আশঙ্কাও করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ১৮ জুলাই শিলিগুড়ির (Siliguri) পিনটেল ভিলেজে কেন্দ্র, রাজ্য ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছিল। পরবর্তীতে এই জিটিএ চুক্তি আইনে পরিবর্তিত হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার এই সই প্রত্যাহার করার বিষয়টি কতটা প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, “আমরা আমাদের সই প্রত্যাহারের মাধ্যমে সমর্থন উঠিয়ে নিলাম। এরপরে আগামীতে এই জিটিএ-র ভাগ্য সম্পূর্ণভাবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করবে।”
[আরও পড়ুন: ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়ে থাকলে ভিডিও দেখান’, বিতর্কের মধ্যে ফের দাবি কংগ্রেস নেতার]
প্রসঙ্গত দার্জিলিং পাহাড়ে ফের অশান্তি দানা বাঁধছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির তরফে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলা হচ্ছে। গত ২৩ জানুয়ারি কালিম্পংয়ের একটি জনসভায় একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল বিনয় তামাং, বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ড। যদিও এতদিন পর্যন্ত তিনজনের রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিল পৃথক। কিন্তু এখন পাহাড়ের উন্নয়নের দাবিতে আলাদা গোর্খাল্যান্ড চেয়ে এক সুর শোনা গেল তাঁদের গলায়। এরপর শুক্রবার মোর্চার পক্ষ থেকে জিটিএ চুক্তি থেকে বেরতে চাওয়া নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: রাজ্যবাসীর জন্য সুখবর, এবার হাওড়া থেকে পুরী পর্যন্ত ছুটবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস]
ওয়াকিবহাল মহলের মত, এতে জটিলতা বাড়ল। কেন্দ্র যদি না চায় তাহলে জিটিএ চুক্তি ভেঙে যেতে পারে। তাতে পাহাড়ের উন্নয়নের কাজ আরও বাধা পাবে। উলটোদিকে, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি সমর্থন করাও কেন্দ্রের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে পরিস্থিতি আদৌ কোন দিকে গড়ায়, তা আঁচ করা কঠিন।