নন্দন দত্ত, বীরভূম: নদীতে সোনা! তা কুড়োতে হুড়োহুড়ি গ্রামবাসীদের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল বীরভূমের (Bibhum) মুরারইয়ের পারকান্দি গ্রামে। প্রায় তিনদিন ধরে নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছেন স্থানীয়রা। কেউ পেয়েছেন টিকলি, কেউ আবার সোনার দুল। এদিকে সুযোগ বুঝে গ্রামবাসীদের পাওয়া বেশ কিছু সোনা নিয়ে চম্পট দিয়েছে একদল দুষ্কৃতী, এমনটাই অভিযোগ।
বিষয়টা ঠিক কী? জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বীরভূমের মুরারই থানার পারকান্দি গ্রামের বাঁশলই নদীতে কিছু কাজে গিয়েছিলেন সুজন দাস নামে এক ব্যক্তি। তিনি ঝাড়খণ্ডের কার্তিকপাড়ার বাসিন্দা। তিনিই প্রথম হদিশ পান সোনার। একাধিক কানের দুল, নাকছাবি, টিকলি পান তিনি। এরপরই বিদ্যুতের গতিতে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে নদীতে সোনা উদ্ধারের ঘটনা। এরপরই নদীর পাড়ে ভিড় জমান বাসিন্দারা। ঝাড়খণ্ড ও বীরভূমের বহু মানুষ সোনার খোঁজ শুরু করে নদীতে। পারকান্দি গ্রামে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, তিনি ১৩৫ টি সোনার টিকলি পেয়েছেন। এদিকে সোনা উদ্ধারের ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই তা হাতানোর ছক কষে দুষ্কৃতীরা।
[আরও পড়ুন: পানাভরতি নদীর দু’পাড়ে গাছে দড়ি বেঁধেই ঝুঁকির পারাপার, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দাবি সেতুর]
অভিযোগ, সোনা উদ্ধারের পরই একদল নিজেদের পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে স্থানীয়দের বাড়িতে হাজির হয়। উদ্ধার হওয়া সোনা নিয়ে চম্পট দেয় তাঁরা। এ বিষয়ে মুরারই ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, “সোনার সন্ধানে ওই এলাকায় তল্লাশি চলছে। পুলিশকে জানানো হয়েছে।” এদিকে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ নদীতে তল্লাশি চালিয়েছে। বীরভূমের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, পরিস্থিতির উপর নজরদারির জন্য এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় পুলিশ পাহাড়া বসানো হয়েছে। জিওলজিক্যাল সার্ভে ও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভেকে খবর দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু কীভাবে নদীতে সোনা? ঝাড়খণ্ডের কার্তিকপাড়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১৫ বছর আগে নদী থেকে ২ টি কলসি ভরতি সোনা উদ্ধার হয়েছিল। মহেশপুর ভগ্নপ্রায় রাজবাড়ির রাখা হয় সেগুলি। তবে এখন রাজবাড়ির অধিকাংশই নদীর জলে তলিয়ে গিয়েছে। অনেকের ধারণা সেই সোনা ভেসে গিয়েছে সুবর্ণরেখায়। ঝাড়খণ্ডের আমরাপাড়া এলাকায় যেখানে সুবর্ণরেখা মিলেছে বাঁশলইতে। অনেকের ধারণা, সুবর্ণরেখা থেকেই ওই গয়না ভেসে এসেছে বাঁশলইতে।