বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: “ধৈর্য ধরুন। আপনার জন্য আরও ভাল কিছু অপেক্ষা করছে। তার আগে মুখে লাগাম দিন। যতদিন না দলের তরফে কিছু বলা হচ্ছে, ততদিন মুখে খিল দিয়ে রাখুন। নির্বাচন আসছে। তাই আরও বেশি করে আপনাকে বাংলায় কাজ করতে হবে।’’
দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) এই পরামর্শ দিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা (JP Nadda)। সোমবার রাতে বাংলা-সহ চারটি রাজ্যের সাংসদদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। ছিলেন জে পি নাড্ডা, অমিত শাহ, রাজনাথ সিং ও নীতিন গড়করি। সেখানে নাড্ডার মুখোমুখি হলেও তিনি দিলীপ ঘোষকে কিছু বলারই সুযোগ দেননি। তার আগেই একগুচ্ছ পরামর্শ দেন। সংঘের চাপেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মেদিনীপুরের সাংসদকে নিয়ে নরম মনোভাব নিচ্ছে বলে সূত্রের খবর।
[আরও পড়ুন: সবজির মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার আমজনতা, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দিল্লির বাজারে রাহুল গান্ধী]
এদিন বাংলার সাংসদদের কাছ থেকে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে মোদি খোঁজখবর নেন বলে জানা গিয়েছে। যদিও বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে মোদির সাক্ষাৎ নিয়ে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলেন, “বাংলার বিজেপিকে নিয়ে ভীত হওয়ারই কথা। সম্ভাব্য সমস্ত সোর্স থেকে যে রিপোর্ট যাচ্ছে বা যাবে, তাতে উদ্বেগ স্পষ্ট। কারণ, বাংলায় সাংসদ কমতে চলেছে। ডবল ডিজিট তো স্পর্শ করবেই না, কোনদিকে যাবে সেটাই দেখার। কাকে কোথা থেকে সরিয়ে আনবে, তাদের ঘরোয়া বিষয়। বাংলার মানুষ যে ওদের প্রত্যাখ্যান করছেন, তা স্পষ্ট।” এদিন বাংলা ছাড়া বিহার ও ঝাড়খণ্ডের সাংসদদের সঙ্গে সংসদের অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে বৈঠক হলেও উত্তরপ্রদেশের সাংসদদের সঙ্গে মহারাষ্ট্র ভবনে সাক্ষাৎ করে টিম মোদি।
দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদ থেকে সরানোর পর থেকেই গোঁসা করে বসে আছেন দিলীপ ঘোষ। বদলে ফেলেছেন দৈনন্দিন রুটিন। সূত্রের খবর, শনিবার ‘টিম নাড্ডা’ গঠন হতেই ঘনিষ্ঠমহলে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার আগেই নাড্ডার নির্দেশে তাঁকে ফোন করেন উত্তরবঙ্গের এক সাংসদ। সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ না খোলার পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় কী বলতে হবে, তাও বলে দেন সেই সাংসদ। ওই সাংসদের পরামর্শ শুনেই তিনি দলের সর্বভারতীয় সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের সঙ্গে কথা বলেন বলে সূত্রের খবর। সন্তোষের কাছ থেকেও একই পরামর্শ মিলতেই মুখে কুলুপ আঁটেন দিলীপ।
[আরও পড়ুন: শুধু রাম মন্দিরে হবে না, ২৪-এর নির্বাচন জিততে উত্তরপ্রদেশের সাংসদদের বার্তা মোদির]
এদিন রাতে বাংলার সাংসদদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছেন নরেন্দ্র মোদি। প্রত্যেক সাংসদকে তাঁদের এলাকায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ বাংলায় কত দূর হয়েছে, সাংসদ তহবিল থেকেই বা তাঁরা কী কাজ করেছেন তারও খতিয়ান দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে অধিবেশন শেষ হলেই প্রচারের কাজ গাড়ির পাঁচ নম্বর গিয়ারে তোলার মতো চালাতে হবে বলে নির্দেশ দেন।