বাবুল হক, মালদহ: কাঁচি দিয়ে কেটে গিয়েছিল এলাকারই এক মহিলার হাতের তালু। তাই দেরি না করে স্থানীয় হাসপাতালে গিয়েছিলেন টিটেনাস নিতে। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী ভুলবশত কুকুরে কামড়ানোর ইনজেকশন দিয়ে দেন ওই মহিলাকে। তারপরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা। বাড়ি ফেরার পর ক্রমাগত মাথা ঘুরতে থাকে তাঁর। বেশ কয়েকবার বমিও হয়। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সদর এলাকায়। যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্তারা।
ঘটনার জেরে হাসপাতালে চিকিৎসক সুব্রত চৌধুরীকে কে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। যদিও রাজ্য-জুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা বেহাল নিয়ে খোঁচা বিজেপি জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়ার। অন্যদিকে সাফাই রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা যুব ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জিয়াউর রহমানের।আর গোটা ঘটনা কে ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপির তরজা।
[আরও পড়ুন: হোম মিনিস্টারের উপরেও স্ত্রীরই ‘হুকুম’ চলে! ভরা সিনেমা হলে বোঝালেন অমিত শাহ]
সঙ্গীতা গুপ্তা হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকার কলম পাড়ার বাসিন্দা। তিনি একটি সেলাইয়ের দোকান চালান। সেলাই করতে গিয়ে কাঁচি দিয়ে তাঁর হাতের তালু কেটে যায়। দেরি না করে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে যান। টিটেনাসের বদলে কুকুরে কামড়ানোর ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় তাঁকে। গৃহবধূ জানতে পারেন, ভুলবশত কর্তব্যরত নার্স ভুল ইঞ্জেকশন দিয়েছেন।
তিনি তৎক্ষণাৎ হাসপাতালের বিএমওএইচ ডাঃ অমল কৃষ্ণ মণ্ডলের কাছে ছুটে যান। চিকিৎসক তাঁকে আশ্বস্ত করেন। ভুল করে কুকুরে কামড়ানোর ইনঞ্জেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁকে শীঘ্রই টিটেনাস নেওয়ার জন্য হাসপাতালে আবার পাঠিয়ে দেন। ওই গৃহবধূ বাড়ি ফিরে যান। অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরিবারের লোকেরা জানান, বেশ কয়েকবার বমি করেন তিনি। মাথাও ঘুরতে থাকে তাঁর। ভুল ইনজেকশন দেওয়াতে এই ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি সংগীতার পরিবারের।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ অন্যান্য রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রা। তাঁদের মত, এভাবে রোগীদের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। যেটা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। হরিশচন্দ্রপুর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল যুব হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। কারণ, মহিলা যে সময়ে গিয়েছিলেন সেই সময় কুকুর, বিড়ালের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। ওই মহিলাও ভ্যাকসিন নিতে গিয়েছিলেন বলেই মনে করা হয়। তার ফলে গণ্ডগোল হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” তবে এ প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।