দীপঙ্কর মণ্ডল: একুশে তৃণমূলের বাংলা বিজয়ের কাণ্ডারি নিঃসন্দেহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তবে তিনি যদি মূল যোদ্ধা হন, তবে যোগ্য সেনাপতি এবং উত্তরসূরি হিসেবে অবশ্যই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। নেপথ্যে থেকে ‘পিসি’র জয়ের শরিক তিনি। তৃণমূলের যুব সভাপতি সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আজ বাড়তি গুরুত্ব দিতে দেখা গেল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান জগদীপ ধনকড়কে। বুধবার রাজভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ অনুষ্ঠানে অভিষেককে ডেকে বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন তিনি। যুবনেতার কাঁধে হাত দিয়ে আলাপচারিতায় মগ্ন রাজ্যপাল। আজকের বিশেষ দিনে এই ফ্রেমটিও বিশেষ হয়ে রইল।
একুশের ভোটে যতবার ‘দিদি’কে আক্রমণ করেছে বিজেপি, তার থেকে বোধহয় অনেক বেশিবারই ‘ভাইপো’ ডাকে আক্রমণ শুনতে হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তৃণমূল নেতৃত্ব বলেছে, কেন্দ্রীয় সরকার যে হারে অভিষেককে আক্রমণ করেছে, তাতে অন্তত এটা প্রমাণিত যে, অভিষেক একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এই অভিষেকই বারবার দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে তৃতীয়বার তৃণমূলের (TMC) ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত বলে জানিয়েছিলেন। ২৯৪এর মধ্যে ২১৩টি আসন পেয়ে তৃণমূলের এই জয়ে অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হয়েছে যুব নেতার আত্মবিশ্বাস। কাজেই এই পরীক্ষা ছিল তাঁরও। দলের ভিতরে-বাইরে তাঁকেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। মুখে আলতো হাসি রেখে কখনও-সখনও তার জবাবও তিনি দিয়েছেন। রবিবার ফল বেরনোর পর সমস্ত সমালোচনার মুখে লেটার মার্কস পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন অভিষেক।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক, ‘মমতা দিদি’র শপথের পর শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী মোদির]
ফলে সর্বস্তরেই তাঁর গুরুত্ব বাড়ছে। বুধবারই একবার সেই প্রমাণ পাওয়া গেল। বুধবার রাজভবনের থ্রোন রুমে জনা পঞ্চাশেক অতিথির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাঝে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankhar) চোখ পড়ল অভিষেকের দিকে। তাঁকে ডেকে নিছক সৌজন্য বিনিময় নয়, বেশ কিছুক্ষণ কথা বললেন ধনকড়। কাঁধে হাত রেখে আশীর্বাদের ভঙ্গিতে দেখা গেল তাঁকে। কুশল বিনিময়ের পর অভিষেকের রাজনৈতিক কেরিয়ারের প্রশংসা করেছেন ধনকড়, এমনই খবর সূত্রে। থ্রোন রুমে থাকা অন্যান্য অতিথিদের মাঝে এভাবে অভিষেকের সঙ্গে আলাদাভাবে আলাপচারিতা বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশই। আর অভিষেকও বোঝালেন, তাঁকে ‘ভাইপো’ তিরে বেঁধা বিরোধীদের অস্ত্র আসলে ভোঁতা হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের এই ঐতিহাসিক জয়ে।