দীপঙ্কর মণ্ডল: ফের আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিংয়ের পদোন্নতির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য প্রশাসনকে এবার কড়া নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল। সোমবার টুইট করে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বিরুদ্ধে চলা মামলার বিস্তারিত জানতে চেয়ে চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দিলেন তিনি। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব এইচকে দ্বিবেদীর নাম উল্লেখ করে জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankhar) তাঁকে ২৯ তারিখের মধ্যে এই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানানোর নির্দেশ দিলেন। রাজ্য পুলিশের এই পদাধিকারীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ ফের রাজভবন-নবান্নের সংঘাত উসকে দিল, বলাই বাহুল্য।
এর আগেও বেশ কয়েকবার টুইটে আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিংয়ের পদোন্নতি নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। এই মুহূর্তে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) পদে থাকা জ্ঞানবন্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে একটি মামলা চলছে। সেই মামলার অগ্রগতি কতদূর, তা আগেও রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ধনকড়। কিন্তু নবান্ন থেকে কেউ তাঁকে সেই রিপোর্ট দেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর প্রশ্ন, যে আইপিএসের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, কীভাবে তাঁর পদোন্নতি করল রাজ্য সরকার? কীভাবেই বা রাজ্য পুলিশের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক হিসেবে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হল? এসব জানতে চেয়ে এবার রাজ্যপাল চূড়ান্ত সময়সীমা দিলেন। টুইটে তিনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে (Home Seceratry) ২৯ তারিখের মধ্যেই তলব করেছেন। জানিয়েছেন, আইপিএস জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে চলা মামলার গতিপ্রকৃতি সংক্রান্ত যাবতীয় বিস্তারিত তথ্য ওইদিন রাজ্যপালের কাছে পেশ করতে হবে স্বরাষ্ট্রসচিবকে।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগদানের পরই রাজভবনে যাচ্ছেন শুভেন্দু, টুইটে জানালেন রাজ্যপাল]
রাজ্য পুলিশকে নিয়ে ধনকড়ের অভিযোগ নতুন নয়। প্রায়ই তিনি পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা, রাজনীতিকরণ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। সাংবাদিক সম্মেলন থেকেও বহুবার নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি রাজ্য সফরে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে নিন্দার সুর আরও চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়ে তিনি রাজভবনে ডেকে পাঠান মুখ্যসচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে। তাঁরা রাজভবনে গেলেও তাঁদের দেওয়া রিপোর্ট যথাযথ নয় বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ধনকড়। তা নিয়ে একপ্রস্ত সংঘাতে জড়িয়েছিল রাজ্য-রাজ্যপাল। এবার জ্ঞানবন্ত সিংয়ের যাবতীয় আইনি রিপোর্ট চেয়ে তাঁর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া সেই সংঘাত আরও উসকে দিল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন তাঁর নির্দেশ পেয়ে নবান্ন কী পদক্ষেপ, সেটাই দেখার।