সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ”কঞ্জুষ বুড়ো বসে গাছে/পাখিদের ডাকে, আয় কাছে/বলে তোরা যদি ঠুকরিয়ে দাড়িগুলো নিস নিয়ে/ নাপিতের খরচাটা বাঁচে।’ সত্যজিৎ রায়ের এই অনবদ্য লিমেরিকে ‘কঞ্জুষ বুড়ো’ খরচ বাঁচাতে পেরেছিল কি না, তা জানা নেই। তবে দাড়ি নিয়ে আফগানরা যে এবার বেজায় বিপাকে পড়েছে সেই খবর প্রকাশ্যে। এবার তালিবানের (Taliban) নয়া ফতোয়া, দাড়ি না থাকলে ঢোকা যাবে না অফিসে।
[আরও পড়ুন: আর্থিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কা! রাজপথে জনতার ঢল, জ্বলল গাড়ি, জারি কারফিউ]
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এবার সরকারি দপ্তরগুলিতে শরিয়তের নিয়মাবলি লাগু করেছে তালিবান। পুরুষকর্মীদের স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া দেওয়া হয়েছে যে দাড়ি না থাকলে তাঁরা আর অফিস প্রবেশ করার অনুমতি পাবেন না। শুধু তাই নয়, ‘পশ্চিমী সংস্কৃতি’র প্রতীক স্যুট-টাই পরেও অফিসে আসা যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় থাকা মৌলবাদী সংগঠনটি। সরকারি কর্মীদের প্রথাগত পোশাক পরে আসার নিদান দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই সরকারি দপ্তরে এই পোশাকবিধি চালু হয়েছে বলে খবর। এই ফতোয়া কার্যকর করতে ইতিমধ্যে সরকারি অফিসগুলিতে কড়া নজরদারি শুরু করেছে তালিবানের ‘পাপ-পুণ্য’ মন্ত্রক।
২০২১ সালে তালিবানের কাবুল দখলের পরই আশঙ্কা ছিল যে ফের মধ্যযুগে ফিরে যাবে আফগানিস্তান। এবার সেই আশঙ্কা সত্যি করে। সদ্য, আফগানিস্তানে (Afghanistan) মেয়েদের জন্য স্কুল খোলার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বন্ধ করে দেয় তালিবান। সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে পালটা বিবৃতি দেয় রাষ্ট্রসংঘ (United Nations)। তবে তারপরেও দমে যায়নি জেহাদি সংগঠনটি। আগেই সরকারি অফিসে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল তালিবান। তারপর জেহাদিরা ফতোয়া জারি করে যে মহিলারা সিরিয়ালে অভিনয় করতে পারবেন না। এছাড়া, মহিলা সাংবাদিকদের হিজাব পরার নির্দেশ দেয় তালিবান।
উল্লেখ্য, গতবছরের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখল করে তালিবান। নতুন করে শুরু হয় অন্ধকার যুগের। তারপর থেকেই আশঙ্কিত গোটা বিশ্ব। তালিবানি তাণ্ডবের বীভৎস চেহারা সারা বিশ্বকে দেখতে হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে রাস্তায় উন্মত্তের মতো ছুটেছে সাধারণ মানুষ। বিশিষ্টরাও বাদ যাননি। তারপর থেকেই চরম অর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তান।