অর্ণব আইচ: উপকূল ও গভীর সমুদ্রে জলের অবস্থা কী? নাব্যতাই বা কতটা? সমুদ্রের কোথায় পলি পড়ছে? কোন পথেই বা যাওয়া সহজ হবে যুদ্ধজাহাজের? এত প্রশ্নের উত্তরে সন্ধানে জলে নামল নৌসেনার জাহাজ ‘সন্ধায়ক’ (Sandhayak)। রবিবার কলকাতার গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্সের (GRSE) ডকে তৈরি হওয়া এই ‘প্রথম বৃহৎ সার্ভে জলযান’এর নামকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় ভাট। এই জাহাজটির নাম ‘সন্ধায়ক’ দেন মন্ত্রীর স্ত্রী পুষ্পা ভাট।
এর আগে গত ৪০ বছর ধরে সমুদ্রে জরিপের কাজ করেছিল ‘আইএনএস সন্ধায়ক’। চলতি বছরের জুন মাসে নৌসেনার ওই জাহাজটিকে পরিষেবা থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এবার নতুন জাহাজটিরও নাম দেওয়া হল ‘সন্ধায়ক’। নামকরণের পর জলে নামে জাহাজটি। তবে এর কাজ এখনও কিছুটা বাকি রয়েছে। এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী অজয় ভাট বলেন, “জল, স্থল ও অন্তরীক্ষে এখন আমরা সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। প্রধানমন্ত্রীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কে মান্যতা দিয়েই নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ ও এই জরিপ জাহাজও জিআরএসইর মতো সম্পূর্ণ ভারতীয় সংস্থায় তৈরি হয়েছে। তার ফলে দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে কর্মসংস্থান।”
[আরও পড়ুন: কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মুর্শিদাবাদের স্কুলশিক্ষকের চাকরি বাতিল করল SSC]
জিআরএসই-র চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিয়ার অ্যাডমিরাল ভি কে সাক্সেনা জানান, আগে নৌবাহিনীর ‘আইএনএস সন্ধায়ক’ তৈরি হয়েছিল এই জিআরএসইতে। নতুন এই সার্ভে ভেসেল বা ‘জরিপ জলযান’টি মাপে আগের ‘সন্ধায়ক’এর তুলনায় অনেকটাই বড়। এর দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার। ৩ হাজার ৪০৮ টনের এই জাহাজের সমুদ্রে গতি ১৮ নট। নৌসেনার ১৮ জন আধিকারিক ও ১৬০ জন কর্মী নিয়ে এই জাহাজ ভাসতে পারে সমুদ্রে। একটি হেলিকপ্টারও বহনে সক্ষম জাহাজটি। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক ‘হাইড্রোগ্রাফিক’ যন্ত্র।
জাহাজটি বন্দরের কাছে, উপকূলবর্তী এলাকা ও গভীর সমুদ্রে গিয়ে জল ও পলির নমুনা সংগ্রহ করবে। জাহাজের ভিতরই থাকছে সমুদ্রবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণার যন্ত্রপাতি। নৌসেনার কোন ধরনের যুদ্ধজাহাজ সমুদ্রের কোন কোন জায়গা দিয়ে সহজে যাতায়াত করতে পারবে, তার জন্য ‘সন্ধায়ক’ নৌসেনাকে ভৌগলিক তথ্যও পাঠাবে।
‘সন্ধায়ক’ ছাড়াও আরও তিনটি বৃহৎ সার্ভে জলযান কলকাতার এই যুদ্ধজাহাজ কারখানায় তৈরি হবে। এ ছাড়াও নৌসেনার আটটি সাবমেরিন ধ্বংসকারী যুদ্ধজাহাজ, উপকূলরক্ষী বাহিনীর একটি দ্রুতগামী টহলদার জাহাজ, বিদেশের নৌবাহিনীর জন্যও যুদ্ধজাহাজ তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে জিআরএসই।