বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: গুজরাট জয়ে বিজেপির পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে আম আদমি পার্টি (AAP)। গুজরাটের শহরাঞ্চলে নতুন ও কমবয়সি ভোটারদের নিয়ে নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। আমেদাবাদ, সুরাট, গান্ধীনগরের মতো পদ্মের শক্ত ঘাঁটিতে ভোটারদের মধ্যে আপের প্রভাব বাড়ছে বলে বিজেপির (BJP) অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে বলে সূত্রের খবর। আপের বাড়বাড়ন্ত চলতে থাকলে শহরাঞ্চলের ১৯টি আসনে ফলাফলে প্রভাব পড়বে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসতেই বৈঠকে বসে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব। যাচ্ছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। আপকে ঠেকাতে রাজ্যনেতাদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে আলোচনা করবেন বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
ষষ্ঠবারও সরকার হচ্ছেই। বরং গতবারের তুলনায় বেশি আসন নিয়ে সরকার গঠিত হবে। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী ছিল গেরুয়া শিবির। যত দিন গড়াচ্ছে, মোদি-শাহদের সেই আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরছে। সম্প্রতি গেরুয়া শিবিরের তরফে একটি সমীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট হাতে আসতেই দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ গভীর হয়েছে। রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, শহরাঞ্চলের নতুন ও কমবয়সি ভোটাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করতে সফল হয়েছে আপ। ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুতে ছাড়, বেকারদের চাকরি, বেকারদের মাসিক তিন হাজার টাকা ভাতা, মহিলাদের অনুদানের পাশাপাশি উন্নত মানের শিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন কাড়তে সফল হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)। তবে আসন জয়ের মতো জায়গায় যে তারা এখনও পৌঁছতে পারেনি, তা-ও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে মোদির আমন্ত্রণে বৈঠকে মমতা, রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা]
আপের পক্ষে যেতে পারে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ ভোট। এর সিংহভাগই বিজেপির ভোটার। সেই ভোটব্যাংকে আপ ভাগ বসালে নিশ্চিত আসন হাতছাড়া হতে পারে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে কয়েকটি আসন কংগ্রেসের (Congress) ঝুলিতে যেতে পারে। শুধু আপ নয়। চিন্তার কারণ গোঁজ প্রার্থীরাও। দলের মনোনয়ন না পেয়ে কয়েকজন প্রবীণ প্রাক্তন বিধায়ক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মধুভাই শ্রীবাস্তবদের মতো নির্দলরাও গেরুয়া ভোটব্যাংকে ভাগ বসাবেন। ফলে নির্দলদের লড়াই থেকে নিরস্ত করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রচারে আরও বেশি সময় দিতে হবে। তবেই ভোটব্যাংকে ক্ষয় রোধ সম্ভব বলে মনে করছে রাজ্য নেতৃত্ব।
ভোট ঘোষণার পর থেকেই অমিত শাহ ও জে পি নাড্ডা কার্যত গুজরাটে (Gujarat) মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন। আগামী সপ্তাহ থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করবেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যান্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের প্রচারে নামতে বলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। মোদি-রাজ্যে প্রচারে যাচ্ছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সকলেই প্রচারে ঝাঁপাবেন বলে জানিয়েছেন দলের এক কেন্দ্রীয় নেতা। তবে যোগী আদিত্যনাথ যাবেন কি না তা স্পষ্ট করেননি।