সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে প্রেমিক-প্রেমিকারা যা করেন, তা ভারতের সংস্কৃতিবিরোধী। তাই ১৪ ফেব্রুয়ারি স্কুলে বাবা-মাকে পুজো করতে হবে। এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেছে গুজরাটের সুরাটের শিক্ষা দফতর। এই অনুষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘পিতৃ-মাতৃ পূজন দিবস’। এমনকী কীভাবে এই আচার পালন করতে হবে, সে সম্পর্কেও স্পষ্ট নির্দেশিকা রাখা হয়েছে। তবে প্রশাসনের এহেন ফতোয়া ঘিরে তুমুল চাপানউতোর শুরু হয়েছে। গুজরাটে বিরোধী দল কংগ্রেসের কটাক্ষ, কে কীভাবে ভ্যালেন্টাইন’স ডে কাটাবে তা না দেখে প্রশাসনিক কর্তাদের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা উচিত।
সুরাটের ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসার(ডিইও) তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “এখন যুব সম্প্রদায় ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালনের নামে এমন কিছু জিনিস করে যা আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে খাপ খায় না। ছোট থেকে সঠিক শিক্ষা দিতে ও আমাদের সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে ওইদিন মা-বাবার পুজো করতে হবে। তবেই সঠিক বার্তা দেওয়া যাবে।” ওই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, স্কুলগুলিকে এই অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নিতে হবে। এমনকী ১৪ তারিখ এই অনুষ্ঠানের ছবিও ডিইও-র কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিকে। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সব অভিভাবকরা উপস্থিত না থাকতে পারলেও বিভিন্ন ধর্ম ও জাতের অভিভাবক-অভিভাবিকা উপস্থিত করতে হবে। এছাড়াও অতিথি হিসেবে শিক্ষা সংসদের সদস্য ও শহরের অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত থাকবেন এই অনুষ্ঠানে।
[আরও পড়ুন : ধৃত মুম্বই বিস্ফোরণে অভিযুক্ত জঙ্গি মুসা, উদ্ধার পাকিস্তানি পাসপোর্ট]
কীভাবে পালন হবে এই অনুষ্ঠান? এ সম্পর্কে শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, “ভারতীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী তিলক, ফুলের মালা দিয়ে মা-বাবাদের পুজো করতে হবে। এরপর হাত জোর করে বাবা-মায়ের চারদিকে ঘুরতে হবে পড়ুয়াদের। তারপর তাঁদের উদ্দেশ্যে ভোগ নিবেদনও করতে হবে।” আরও নির্দেশ হয়েছে, ছেলে-মেয়েদের জীবনে মা-বাবার ভূমিকা নিয়ে বক্তব্যও রাখতে হবে।
[আরও পড়ুন : প্রেমপ্রস্তাব খারিজ করায় অধ্যাপিকার গায়ে আগুন, ৭ দিন পর হাসপাতালে মৃত্যু তরুণীর]
তবে শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশিকা ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। সমালোচকদের অভিযোগ, ব্যক্তিগত জীবনে কে কী করবে সেটা একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। সে বিষয়ে কেন শিক্ষা দপ্তর নাক গলাচ্ছে? অভিযোগ, ছোট-ছোট ছেলমেয়েদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুজরাট কংগ্রেসের মুখপাত্র মণীষ দোশী বলেন, “রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এ ধরণের ফতোয়া না জারি করে শিক্ষার মান উন্নয়নের দিকে নজর রাখার দরকার।” তবে এই নির্দেশিকার মধ্যে কোনও অন্যায় দেখছেন না শিক্ষা দপ্তর। তাঁধের কথায়, “দেশের সংস্কৃতি মানার মধ্যে কোনও অন্যায় তো দেখছি না।”
The post ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে প্রেম নয়, পুজো করতে হবে বাবা-মাকে! ফতোয়া সুরাটে appeared first on Sangbad Pratidin.