সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নমাজ (Namaz) চলাকালীন গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে দুষ্কৃতী হামলার ঘটনায় নিন্দায় মুখর গোটা দেশ। ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে খোদ বিদেশ মন্ত্রক। এহেন পরিস্থিতির মাঝে এবার বিদেশি পড়ুয়াদের (Foreign student) ভারতের সংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভাবাবেগ (Cultural Sensitivity) সম্পর্কে অবগত করতে বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এপ্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ নীরজ এ গুপ্তা বলেন, “যেহেতু ওই শিক্ষার্থীরা বিদেশি, তাই তাঁদের ভারতের ‘সাংস্কৃতিক সংবেদনশীলতা’ সম্পর্কে জানা উচিত। পড়ুয়াদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। এখানকার সংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ভাবাবেগ সম্পর্কে তাঁদের অবগত হওয়া প্রয়োজন। আমরা ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে বসে কথা বলব এবং কীভাবে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে তাঁদের অবগত করানো যায় তার উদ্যোগ নেব।” পাশাপাশি ওই পড়ুয়াদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করা হবে বলে জানান উপাচার্য।
[আরও পড়ুন: হস্টেলে নমাজ পড়ার সময় বিদেশি পড়ুয়াদের উপরে হামলা, ভাঙচুর! চাঞ্চল্য গুজরাটে]
গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের (Gujarat University) হস্টেল চত্বরে কোনও মসজিদ না থাকায় শনিবার রাত্রিকালীন নমাজ পড়তে হস্টেলের ভিতরেই একত্রিত হয়েছিলেন পড়ুয়ারা। অভিযোগ, সেই সময়ই সেখানে উপস্থিত হয় উত্তেজিত জনতা। তাদের হাতে ছিল লাঠি, ধারাল ছুরি। তারা হস্টেলে ভাঙচুর চালায়। হস্টেলের নিরাপত্তারক্ষীরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, তুর্কমেনিস্তান ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে গুজরাটে পড়তে আসা ৫ জন। সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বেশ কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একদল লোক হস্টেলে ঢুকে পাথর ছুঁড়ছে এবং বাইক ভাঙচুর করছে। আফগানিস্তানের নাগরিক এক ছাত্র সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় জানান, ”ওরা ঘরের ভিতরে ঢুকে হামলা চালিয়েছে। ল্যাপটপ, ফোন, বাইক সব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: প্রথম রাজ্য হিসাবে CAA রুখতে সুপ্রিম কোর্টে কেরল, আবেদন ওয়েইসিরও]
এই ঘটনার তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে দেশের বিদেশমন্ত্রক। ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের তরফে এফআইআর দায়ের করার পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২ জনকে। ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছে গোটা দেশ। হামলার ভিডিও এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করে মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি লেখেন, ‘এটা অত্যন্ত লজ্জার। যখনই মুসলিমরা শান্তিপূর্ণভাবে তাঁর ধর্ম পালন করে তখনই আপনার ভক্তি ও ধর্মীয় স্লোগান বের হয়। এটা মৌলবাদ ছাড়া আর কী? যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটা প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজের রাজ্য। তাঁরা কী এবিষয়ে কোনও বার্তা দেবেন না?’ পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরকে উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, ‘দেশের মধ্যে এমন মুসলিম বিরোধী ঘৃণার বাতাবরণ বিদেশের মাটিতে দেশের দুর্নাম করছে।’