সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ফের গুলির লড়াইয়ে কাঁপল মণিপুর। সূত্রের খবর, সশস্ত্র স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ চলছে সেনাবাহিনীর। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। আহত অন্তত ২০ জন। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৬টা নাগাদ টেংনোপল জেলার পাল্লেল এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয় সেনাবাহিনীর। এখনও তা চলছে। সেনার পাশাপাশি এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব়্যাফ, মণিপুর পুলিশ ও অসম রাইফেলসের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বলে রাখা ভাল, মণিপুরের ১৬টি জেলার মধ্যে ৫টিতে কুকিরা সংখ্যাগুরু। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে টেংনোপল। এখানে ইউনাইটেড পিপলস ফ্রন্ট (UPA) ও কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (KNO) মতো বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলির জোরাল উপস্থিতি রয়েছে। স্থানীয়দের কাছেও রয়েছে প্রচুর হাতিয়ার। মেতেই গ্রামগুলিতে হামলার জন্য তা ব্যবহার করা হয়।
[আরও পড়ুন: ‘জনআন্দোলনের রূপ পেয়েছে ভারতের জি-২০ উদ্যোগ’, মত জয়শংকরের]
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কুকি ও মেতেই দুই সম্প্রদায়ের জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে হাতিয়ার জমা নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। তবে সন্ত্রাসদমন প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে মেইরা পাইবির মতো সংগঠনগুলি। সাধারণ মানুষ বা ‘ভূমিপুত্র’রা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের জঙ্গিদের আড়াল করছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোরাল।
উল্লেখ্য, ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই ছিল এই মিছিল। ক্রমেই তা হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মেতেই সংখ্যাগুরু ইম্ফল উপত্যকায় বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এর প্রতিক্রিয়াও হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় দুশো জনের।
পাঁচ মাস ধরে জাতিদাঙ্গায় পুড়ছে মণিপুর (Manipur)। হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করার পরও থেকে থেকেই জ্বলে উঠছে হিংসার আগুন। শান্তি ফেরাতে আসরে নামতে হয়েছে সুপ্রিম কোর্টকেও। এই প্রেক্ষাপটে মণিপুরে ‘মানবাধিকার হনন’ ও সরকারের ‘অপর্যাপ্ত’ পদক্ষেপের অভিযোগ তুলে রিপোর্টে মোদি সরকারকে বিঁধেছেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা।