ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে শিক্ষা দপ্তরের নির্দেশ মেনে কাজ করার দরকার নেই বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিলেন রাজ্যপাল। সেই বিজ্ঞপ্তিকে আইন-বিরুদ্ধ ঘোষণা করে সোমবার পালটা নির্দেশিকা জারি করল উচ্চ শিক্ষা দপ্তর।
বিশ্ববিদ্যালয় আইনের উল্লেখ করে শিক্ষা দপ্তরের তরফে উপাচার্যদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আইনে লেখা রয়েছে রাজ্যপাল যা পদক্ষেপ করবেন, তা রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তর মারফত হতে হবে। কিন্তু আইন এক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। তাই গত ২ সেপ্টেম্বর রাজভবনের জারি করা নির্দেশ কোনওভাবেই যেন কার্যকর করা না হয়। রাজভবনের বিশেষ সচিবের কাছেও দপ্তর থেকে এই মর্মে চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছে, যে নির্দেশিকা রাজ্যপাল দিয়েছে, তা জারি করা উচিত হয়নি। এই নিয়ে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত যখন তুঙ্গে, সেই আবহেই সোমবার সিভি আনন্দ বোসকে নিশানা করেছেন রাজ্যর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর কথায়, “দায়িত্ব নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে দেউলিয়া করে দিতে উঠে পড়ে লেগেছেন বাংলার নতুন রাজ্যপাল। তিনি নিয়মকানুনের ধার ধারেন না। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ বিদূষক আমাদের রাজ্যপাল। আগের রাজ্যপালদের সঙ্গে ডায়ালগ হত। এখন শুধুই মনোলগ!”
[আরও পড়ুন: ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল নয় এখনই, অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ল হাই কোর্টে]
এই পরিস্থিতিতে শিক্ষা দপ্তর আইনের দ্বারস্থ হচ্ছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্যর অভিযোগ, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে রাজ্যপাল নষ্ট করতে চাইছেন। এমনকী মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে তোয়াক্কা না করে, তাঁকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে রাজ্য সরকার ও উচ্চ শিক্ষা দপ্তরকে বাইপাস করছেন রাজ্যপাল। যা জানা গিয়েছে, তাতে এই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ইস্যুতেই বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে পারে শাসকদল। বিষয়টি ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে বলে জানিয়েও ব্রাত্য মনে করিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সিদ্ধান্তের উপরও সার্কুলার জারি করেছেন রাজ্যপাল।
উপাচার্য নিয়োগ এবং ইচ্ছামতো তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ। শিক্ষা পরিবেশকে অশান্ত করে তুলতে ইচ্ছাকৃতভাবে আইনের উর্ধ্বে গিয়ে নানা পদক্ষেপ করছেন বলে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে একেবারে খড়্গহস্ত তৃণমূল। ব্রাত্য বলেন, বর্তমান রাজ্যপাল কোনওভাবেই আলোচনায় বসতে চান না। তাঁর কথায়, “আমরা আলোচনার পক্ষে। দপ্তরের সচিব রাজভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। ওঁর তালিবানি ফতোয়ার পরও আমরা ফাইল পাঠিয়ে গিয়েছি। কিন্তু আলোচনা হয়নি।”