অর্ণব দাস, বারাকপুর: রাজ্য সরকারের 'কন্যাশ্রী' প্রকল্পের সহায়তায় এখন গোটা শিক্ষাজীবনই নিখরচায় কাটিয়ে দিতে পারেন বাংলার মেয়েরা। প্রথম শ্রেণি থেকে একেবারে স্নাতকোত্তর, এমনকী গবেষণার স্তরেও রয়েছে সরকারি স্কলারশিপ। কিন্তু তা সত্বেও দেখা যাচ্ছে, নারী শিক্ষায় পিছিয়ে অনেক এলাকা। আর তা রুখতে এবার কার্যত দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছে প্রশাসন। শনিবার, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে হাবড়ায় কন্যাদের স্কুলছুট আটকাতে প্রশাসনিক আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নিলেন, জনসচেতনতা বাড়াতে বাড়ি বাড়ি যাবেন তাঁরা। আগামী এপ্রিল থেকে শুরু হতে চলেছে এই কর্মসূচি। হাবড়া পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ড ও চারটি পঞ্চায়েত এলাকায় তা চলবে।
শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে হাবড়ায় প্রশাসনিক উদ্যোগে একাধিক কর্মসূচি ছিল। হাবড়া কলতান প্রেক্ষাগৃহে বিশেষ ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, হাবড়ার বিডিও সুবীর কুমার দণ্ডপাট-সহ অন্যান্য পদাধিকারীরা। সেখানে দু'টি ভাগে ৪,১৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে 'সবুজ সাথী'র সাইকেল দেওয়া হয়। সেখানেই কন্যাসন্তানদের স্কুলছুট আটকাতে বিশেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছে, হাবড়া বিডিও অফিস, হাবড়া পুরসভা ও হাবড়া থানায় তিনটি বিশেষ সেল খোলা হবে। স্কুলছুট সংক্রান্ত কোনও খবর এলে সরকারি আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বাড়ি বাড়ি যাবেন। আর্থিক সংকট বা অন্য কোনও কারণে ছাত্রীরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করলে সরকারিভাবে তাকে সাহায্য করা হবে। বই-খাতা কিনে দেওয়া থেকে স্কুলের ফি - সব খরচ করা হবে সরকারি তহবিল থেকে।
বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ''নারী দিবসে আমরা প্রশাসনিকভাবে আজ একটি বিশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। হাবড়া পুরসভার ২৪টি ওয়ার্ড ও চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সব বুথে আমরা নজর রাখব। পড়াশোনার মাঝে কন্যাসন্তানদের স্কুলছুট আমরা প্রতিরোধ করব। সরকারি আধিকারিকদের গ্রামে গ্রামে পাঠানো হবে। তাঁরা বাড়ি বাড়ি খোঁজ নিয়ে যদি কোনও কন্যাসন্তান স্কুল ছেড়ে দেয়, তাকে আবার স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।'' বিধায়কের আরও সংযোজন, ''কন্যাসন্তান হল ঘরের লক্ষ্মী। বাড়িতে কন্যাসন্তানের জন্ম হলেই বাবার উন্নতি হবেই। আমারও মেয়ে আছে। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে গর্ব করি।''